বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ময়মনসিংহ সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, আমরা শুধু মাদক নয়, মানব পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছি। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে সিমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ উত্তর-পূর্ব রিজিয়ন সীমান্তে সুরক্ষা, চোরাচালান দমন ও মাদক প্রতিরোধ অভিযানে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ মাস ২৫ দিনে ৭১০ কোটি টাকার মালামালসহ ৫২৬ জনকে আটক করেছে।
একই সঙ্গে চোরাচালান প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সতর্ক করা হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে ময়মনসিংহে নগরীর খাগডহর বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তরে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সেক্টর কমান্ডার।
বিজিবি কর্মকর্তা জানান, গণসংযোগের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণকে বলা হয়েছে, সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক, অস্ত্র বা জাল নোট প্রবেশ করলে তা অবিলম্বে বিজিবিকে জানাতে হবে। এ ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে যারা এসব নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের নজরদারির আওতায় রাখা হয়েছে।
গত ১০ মাসে বিজিবির অভিযান সম্পর্কেও তিনি তথ্য দিয়েছেন। সীমান্তের নিরাপত্তায় সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে বিজিবির সদস্যরা। চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় ৪ সেক্টরের অধীনে ইউনিটগুলোতে ১০ মাস ২৫ দিনে বিজিবি সরাইল রিজিয়ন সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে।
এ সময় চোরাচালান বিরোধী অভিযানে ৭১০ কোটি ৮১ লাখ টাকার চোরাচালানী পণ্য ও ৬৪ জন আসামি আটক হয়েছে এবং মাদকবিরোধী অভিযানে ৪৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার মাদক ও ৩৩০ জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।
ময়মনসিংহ সেক্টরে ৫৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকার চোরাচালানী পণ্য ও ১৪ জন আসামি এবং ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকার মাদকসহ ১০০ জন আসামিকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া, অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে সরাইল রিজিয়নের অধীনে বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করে ১৮ জন আসামিসহ ৯,৭৫,৭৫৬ ঘনফুট বালু ও ৪,৯১,৮৪২ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে।
এসব অভিযানে ২৭টি ট্রাক, ৭৫টি ট্রলি, ৪৫টি ট্রাক্টর, ১৮টি লরি ও ৪০টি নৌকা জব্দ করা হয়েছে এবং অবৈধ সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতি রক্ষায় জালনোট পাচার প্রতিরোধের জন্য সীমান্তে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
সীমান্তে চোরাচালান, মাদক, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে বিজিবি ড্রোন, নাইট ভিশন ও ডিজিটাল সার্ভেইলেন্স ব্যবহার করে নজরদারি জোরদার করেছে। আগামীতেও এ ধরনের অভিযানে বিজিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে বলে জানান তিনি।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন