বগুড়ায় ‘জিনের বাদশা’ পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সদস্য মহিদুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার (অব.) মো. মোমিনুর রহমান (৬৫) সোনাতলা থানায় হাজির হয়ে মহিদুল ইসলামসহ চার জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃত মহিদুল ইসলাম সোনাতলা উপজেলার রানিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামতসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাদী মোমিনুর রহমান জানান, কয়েক মাস আগে মহাস্থান ইসলামি জলসায় তার সঙ্গে মহিদুল ইসলামের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে তাদের মাঝে যোগাযোগ তৈরি হয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে বাদীর মেয়ে ফাতেমা জানান যে, মহিদুলের বাড়িতে ইসলামিক জলসা চলছে এবং সেখানে তাকে যেতে বলা হয়েছে। বাদী আরও ৬ জনকে নিয়ে সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে যান।
পরের দিন বিবাদী ও তার সহযোগীরা খাবারের সঙ্গে অজ্ঞাত মেডিসিন, কেমিক্যাল বা ঝাঁড়ফুঁক প্রয়োগ করে বাদীকে অস্বাভাবিক অবস্থায় রাখেন, যাতে তিনি কোনো যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন। এরপর প্রায় ৭ দিন বাদীকে বিভ্রান্ত রেখে তার আত্মীয়-স্বজনের ফোন এড়িয়ে যান।
এই সময় এবং পরবর্তী কয়েক দিনে বিবাদীরা নগদ টাকা ও বিকাশের মাধ্যমে বাদীর নিকট থেকে মোট ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। অভিযোগ পেয়ে সোনাতলা থানায় মামলা রুজু হয়।
মামলা রুজুর পর জেলা গোয়েন্দা শাখা বগুড়ার এসআই (নিরস্ত্র) মো. আরিফুল ইসলাম ২-এর নেতৃত্বে একটি চৌকস দল মহিদুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং প্রতারণায় ব্যবহৃত নিচের আলামতগুলো উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত আলামত ২টি কথিত হাড়, ২টি সুরমাদানি, ৩টি লাল কাপড়, ১টি আতর, ২টি তাবিজ, ৩ টুকরা সাদা কাপড়, ৩টি তসবিহ (ছোট-বড়), ৫টি আগরবাতি, কালো সুতা।
বগুড়া জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ইকবাল বাহার বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মহিদুল ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে তিনি কবিরাজি চিকিৎসা, জিন-পরি নিয়ন্ত্রণ ও অলৌকিক ক্ষমতার ভান দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে আসছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।

-20251205105949.webp)

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন