বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিয়ানীবাজার (সিলেট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৬:০১ পিএম

আইফোন ছিনতাইকে কেন্দ্র করে ইমন হত্যা: প্রধান আসামি গ্রেপ্তার, রহস্য উদঘাটন

বিয়ানীবাজার (সিলেট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৬:০১ পিএম

নিহত ইমন আহমদ ও আশরাফুল করিম। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নিহত ইমন আহমদ ও আশরাফুল করিম। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সিলেটের বিয়ানীবাজারে চাঞ্চল্যকর ইমন আহমদ (২০) হত্যা মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি আশরাফুল করিমকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন। 

কিছুদিন আগে পরিবারের অমতে অন্য জেলার এক নারীকে বিয়ে করে পৃথকভাবে বসবাস শুরু করেন ইমন। বিয়ের পর থেকেই তিনি বিপদগামী হয়ে পড়েন। একসময় গাড়ি চালালেও পরে টমটম চালানো শুরু করেন, এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, গ্রেপ্তার আশরাফুলের সম্বন্ধী সাজেদুল ইসলাম মুন্না সম্প্রতি বিদেশ যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু বিদেশগামী হওয়ার প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে না পারায় নিহত ইমনের আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের ওপর নজর দেয় তারা। এটি বিক্রি করার উদ্দেশ্যে প্রায় ৭-৮ দিন ধরে আশরাফুল ও মুন্নার মধ্যে পরিকল্পনা চলে।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত রোববার মাগরিবের নামাজের পর আশরাফুল ইমনকে নিয়ে বালিঙ্গার আটগঞ্জে ওয়াজ মাহফিলের বাজারে যান। আটগঞ্জ বাজারের একটি দোকান থেকে আগে থেকেই রশি কিনে রাখেন মুন্না। রাতে নীরবতা বাড়ার পর আশরাফুল ইমনকে নিয়ে শালেস্বর আইডিয়াল একাডেমি মাদরাসার পাশে যান; সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুন্নাও। এক পর্যায়ে আইফোন নিয়ে ধস্তাধস্তির সময় ইমনের গলায় রশি পেঁচিয়ে ফোনটি ছিনিয়ে নেন তারা।

পরবর্তীতে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ইমনের হাত-পা ও মুখ রশি দিয়ে বেঁধে স্থানীয় অপু সিদ্দিকির বাড়ির নির্জন পুকুরে উপুড় করে ফেলে দেন—পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে ভিডিও কলে আশরাফুলের দেখানো স্থান থেকে হাত–পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ইমনের উপুড় করা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় যুবক নুরুল আমিন বলেন, ‘ধূর্ত আশরাফুল হত্যাকাণ্ডের পর নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ইমনের নিখোঁজের তথ্য শেয়ার করে। এমনকি সে তাকে খোঁজাখুঁজিতেও অংশ নেয়।’

যদিও মঙ্গলবার রাতে জিডি হওয়ার পর থেকেই সে গা-ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় ইমনের ফোনে আশরাফুলের দফায় দফায় কল দেওয়ার তথ্য পেয়ে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এরপরই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি বের হয়ে আসে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মালিক বলেন, ‘আশরাফুল বখাটেপনায় জড়িত। তার পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো নয়।’

বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ছবেদ আলী বলেন, নিহত ইমনের খোয়া যাওয়া আইফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এজাহারনামীয় অপর আসামি সাজেদুল ইসলাম মুন্নাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আশরাফুল ও মুন্নাকে এজাহারনামীয় আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

নিহতের ভাই জাবেদ আহমদ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। স্থানীয়রা জানান, ইমন আহমদের পিতা মুতলিব মিয়াও ডাকাতদের গুলিতে নিহত হন।

বিয়ানীবাজার থানার ওসি মো. ওমর ফারুক বলেন, গ্রেপ্তার আশরাফুলকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতে তার জবানবন্দির পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য আরও স্পষ্ট হবে।

নিহত ইমন আহমদ কুড়ারবাজার ইউনিয়নের খশির নামনগর গ্রামের মৃত মুতলিব মিয়ার ছেলে। প্রধান আসামি আশরাফুলও একই গ্রামের আব্দুল করিম মনাইর ছেলে। অপর আসামি মুন্নার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। 

কটি সূত্র জানায়, মুন্নার বিদেশ যাওয়ার বেশ কিছু কাজ ইতোমধ্যে এগিয়েছে, যেকোনো সময় সে দেশ ছাড়তে পারে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে ইমন আহমদকে দাফন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, কুড়ারবাজার ইউনিয়নের বৈরাগীবাজার এলাকাবাসী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও প্রধান আসামি গ্রেপ্তারের ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা অপর আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। 

বুধবার রাতে বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী থানার ওসির সঙ্গে দেখা করে তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়ায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।

Link copied!