ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বাগেরহাটে সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ১২:৫২ পিএম
বেসরকারি হাসপাতাল ল্যাব ওয়ানের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে গাড়ি, ইনসেটে সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুল আলম। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সরকারি বিধি অনুযায়ী শুধু অফিসিয়াল কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও বাগেরহাটে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে। দায়িত্বশীল পদে থেকে তিনি নিয়ম ভঙ্গ করে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন বেসরকারি ক্লিনিকের চেম্বারে রোগী দেখার কাজে। এ ঘটনাকে প্রশাসনিক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে দেখছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে সরেজমিনে রামপাল উপজেলার ফয়লা বাজারে দেখা যায়, সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুল আলম বেসরকারি হাসপাতাল ল্যাব ওয়ান-এ ৫০০ টাকা ফি নিয়ে রোগী দেখছেন। এ সময় হাসপাতালের বাইরে তার ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

ল্যাব ওয়ানের ম্যানেজার কৌশিক মহল সাংবাদিকদের বলেন, বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুল আলম নিয়মিতভাবে আমাদের এখানে রোগী দেখেন। তিনি প্রায় প্রতি বুধবার বিকেল ৪টার দিকে আসেন এবং চেম্বার করেন।

অর্থাৎ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়মিতভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখা একটি দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি ফেসবুকে প্রচার চালিয়েও রোগী দেখার বিষয়টি প্রকাশ করছেন।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ডা. মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমি তিন মাস আগে বাগেরহাটে যোগদান করেছি। আমার ব্যক্তিগত গাড়ি নেই। সে কারণে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছি। তবে আমার জানা ছিল না যে, সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা যায় না।

তার এমন বক্তব্যকে অনেকেই দায়িত্ব এড়ানোর কৌশল হিসেবে দেখছেন। কারণ সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে দায়িত্বে যোগদানের আগেই সরকারি যানবাহন ব্যবহারের নিয়ম-কানুন জানার কথা।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, একজন জেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা যদি সরকারি নিয়ম না মানেন, তবে তা অন্য কর্মকর্তাদের জন্য নেতিবাচক দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। এতে প্রশাসনের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

তারা আরও বলছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে সাধারণ মানুষ মনে করবে সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সুবিধার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। এতে প্রশাসনের প্রতি আস্থা কমবে এবং সরকারের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

সচেতন মহলের দাবি, একজন সিভিল সার্জনের মতো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা ও সরকারি নিয়ম মেনে চলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত। অথচ তিনি নিজেই নিয়ম ভঙ্গ করছেন। এ জন্য তাকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।