ঢাকা রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

শ্বশুরকে খুন করে তার ভ্যানগাড়ি বেচে দিলেন জামাতা

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ০২:৩৯ পিএম
কৃষ্ণ বাড়ৈ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শ্বশুর অখিল হালদার মন্টুকে (৬০) গলা টিপে হত্যার অভিযোগে জামাতা কৃষ্ণ বাড়ৈকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার কৃষ্ণ বাড়ৈ গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বাকাই গ্রামের কানাই বাড়ৈর ছেলে। নিহত অখিল হালদার মন্টু আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামনন্দের আঁক গ্রামের মৃত মনিমোহন হালদারের সন্তান।

থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে অখিল হালদার দুধ বিক্রি করতে গৈলা বাজারে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে রাজিহার বাজারের ওয়াপদা সড়কে জামাতা কৃষ্ণ বাড়ৈ তাকে কৌশলে নিজের সঙ্গে নিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

পরদিন বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) অখিল হালদারের স্ত্রী বিউটি হালদার আগৈলঝাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। শুক্রবার কৃষ্ণ হঠাৎ শ্বশুরবাড়িতে এলে তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা লক্ষ্য করে পরিবারের সদস্যরা সন্দেহ প্রকাশ করেন। এরপর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে পুলিশ দেখতে পায়, নিখোঁজ হওয়ার দিন কৃষ্ণ ও অখিল হালদারের মোবাইলের অবস্থান ছিল একই জায়গায়। পাশাপাশি ডাসার থানার পাথুরিয়ারপাড় এলাকার একটি সিসিটিভি ফুটেজে কৃষ্ণকে শ্বশুরের দুধের কলসিসহ ভ্যানগাড়ি নিয়ে মাদারীপুরের দিকে যেতে দেখা যায়। পরে শুক্রবার রাতেই কৃষ্ণকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কৃষ্ণ একাই শ্বশুরকে গলা টিপে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

পুলিশ আরও জানায়, রাজিহার ইউনিয়নের আহুতি বাটরা গ্রামের সড়কের পাশের একটি খালে কচুরিপানার নিচ থেকে অখিল হালদারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মাদারীপুর থেকে বিক্রি করা ভ্যানগাড়িটিও জব্দ করা হয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহতের স্ত্রী বিউটি হালদার বলেন, ‘আমার স্বামীর অমতে প্রায় দুই বছর আগে কৃষ্ণ বাড়ৈকে বিয়ে করে আমার মেয়ে। সেই থেকেই আমাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। নানা কারণে সে আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।’

আগৈলঝাড়া থানার ওসি মো. অলিউল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে কৃষ্ণ বাড়ৈর ওপর সন্দেহ হয়। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর সে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেখানো স্থানে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’

ওসি আরও বলেন,  ‘তদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।’