কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে খুশি হয়ে মিষ্টি বিতরণ করতে গিয়ে খুন হয়েছেন ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বরিশালের বাবুগঞ্জের স্টিলব্রিজ এলাকায় মিষ্টি বিরতণের আগেই বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় নেতা আউয়াল হাওলাদার লোকজন নিয়ে ছাত্রদল নেতা রবিউলকে মারধর শুরু করেন। এবং একপর্যায়ে হামলাকারীদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি রবিউল ইসলাম। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যু হয়।
এর আগে সোমবার দুপুরের পরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মূলত আদালতের এই রায়ে খুশি হয়ে বা স্বাগত জানিয়ে বাবুগঞ্জ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সোমবার সন্ধ্যায় মিষ্টি বিতরণ আয়োজন করেছিলেন।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রদল আয়োজিত মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের পদবিহীন নেতা মো. আউয়াল হাওলাদারকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে লোকজন নিয়ে আয়োজনস্থল বাবুগঞ্জ স্টিলব্রিজ এলাকায় গিয়ে গন্ডগোল শুরু করে দেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ছাত্রদল নেতা রবিউলের সাথে স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আউয়ালসহ সহযোগীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় আশপাশ এলাকাসমূহে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, উভয়গ্রুপের মধ্যে সংঘাতের একপর্যায়ে রবিউলকে কেউ ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং রক্তক্ষরণ দেখা যায়। তখন তাকে উদ্ধার করে স্বজনদের সহযোগিতায় শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এর আগেই পথে তার মৃত্যু ঘটে। তবে ছুরিকাঘাত করেই স্থান ত্যাগ করায় আউয়াল বা তার দুই সহযোগী মো. রাসেল এবং মো. শাকিলকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ‘মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা রবিউলের প্রাণ গেছে। মঙ্গলবার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই বিয়োগান্তের ঘটনায় রবিউলের পরিবারকে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে এজাহার নিয়ে আসতে বলা আছে।’
তবে অভিযুক্তদের ধরতে সোমবার রাত থেকেই তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দাপুলিশের একাধিক টিম। বরিশাল জেলা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য রূপালী বাংলাদেশকে নিশ্চিত করে।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন