মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাজস্থলী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম

ভাঙনের কিনারায় স্বপ্ন, রাজস্থলী ঝুলন্ত সেতুতে চরম ঝুঁকি

রাজস্থলী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার রাজস্থলী উপজেলার গর্ব, পরিচয় ও যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হিসেবে পরিচিত দেশের দীর্ঘতম ‘রাজস্থলী ঝুলন্ত সেতু’ আজ চরম অবহেলায় ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়ে আছে। দীর্ঘদিন সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, অতিরিক্ত জনচাপ এবং অতিবৃষ্টির ফলে সেতুটির পাটাতন একের পর এক ভেঙে পড়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম ঝুলন্ত সেতুটি ১৯৮৭ সালে নির্মিত হয়। এ সেতুটি বহুদিন ধরেই সংস্কারের অভাবে নড়বড়ে অবস্থায় ঝুলে আছে। দেখভালের দায়িত্ববান কোনো পক্ষের তৎপরতা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে হাজার মানুষের যাতায়াত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১ নম্বর ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন, রাজস্থলী বাজার, উপজেলা সদর এবং ২ নম্বর গাইন্দ্যা ইউনিয়নের সঙ্গে সহজ সংযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে নির্মিত হয় এ সেতুটি। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক, রোগী, ব্যবসায়ীসহ কয়েক হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করে চলাচল করে। ঐতিহ্য ও জনজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়ানো রাজস্থলী উপজেলার ঝুলন্ত সেতুটি শুধু একটি যোগাযোগ স্থাপনা নয়—এটি রাজস্থলীর পরিচয়, গর্ব এবং মানুষের আবেগের প্রতীক। ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর সুপ্রসিদ্ধ ডেয়ারিং টাইগার্স বাহিনীর উদ্যোগে সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। তখন থেকেই এটি পাহাড়ি জীবনযাত্রার একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

সেতুটির নিচে কাপ্তাই নদী, আর তার ওপর প্রায় ৫০–৬০ ফুট উচ্চতায় ঝুলে থাকা এই কাঠের সেতুটির এখন ভয়াবহ অবস্থা। প্রায় পাঁচশ পাটাতনের মধ্যে শতাধিক ভেঙে গেছে—কোথাও দুলছে, কোথাও সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। ভাঙা অংশে অস্থায়ীভাবে পাতলা কাঠ বসিয়ে মানুষকে চলাচল করানো হচ্ছে, যা যেকোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা উমংচিং মারমা বলেন, “বৃষ্টি হলেই পাটাতন নরম হয়ে যায়। পা রাখলেই দুলে ওঠে। প্রতিদিন মনে হয়, আজই বুঝি সেতুটা ভেঙে পড়ে যাবে। কিন্তু উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই যেতে হয়।”

প্রতিদিন কয়েকশ শিক্ষার্থী এই সেতু ব্যবহার করে বিদ্যালয় ও কলেজে যায়। সেতুর দুলতে থাকা ভাঙা পাটাতন শিশুদের মনে ভীষণ ভয় তৈরি করেছে।

স্থানীয় অভিভাবক বিশু সাহা জানান, ওদের দেখে আমাদেরই ভয় লাগে। কিন্তু ঘুরে গেলে সময় লাগে দুই থেকে তিন ঘণ্টা। তাই বাধ্য হয়েই সন্তানদের এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েই স্কুলে পাঠাতে হয়।

রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান খান বলেন, “সেতুটির বেহাল অবস্থা আমাদের নজরে এসেছে। আমরা ইতোমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে সংস্কারের বিষয়ে লিখিত আবেদন করেছি। প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি দ্রুতই সংস্কার কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।” তিনি আরও বলেন, “জনগণের নিরাপত্তাই আমাদের প্রথম প্রাধান্য। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং ঝুঁকি কমাতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো দ্রুতই গ্রহণ করছি। স্থানীয়দের সাময়িক ধৈর্য ধরার অনুরোধ করছি।”

রাজস্থলীর মানুষ মনে করেন, এই সেতু শুধু একটি কাঠামো নয়—এটি তাদের জীবনযাত্রার কেন্দ্রবিন্দু, অর্থনীতি, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার অক্সিজেন। তারা জোরালোভাবে দাবি জানিয়েছেন—“অবিলম্বে সেতুটি সংস্কার না হলে বড় দুর্ঘটনা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই সেতুটি বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।”

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!