আওয়ামী লীগ আমলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ তথাকথিত মামলায় হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেক সাংবাদিক। তাদের একজন বগুড়ার নজরুল ইসলাম দয়া। শেখ হাসিনার পতনের পরও এই সাংবাদিকের পিছু ছাড়েনি হয়রানি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার ঘটনার মামলায় তাকে আসামি করায় গণমাধ্যম কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দীন জানান, গত ৫ নভেম্বর রাতে সদর থানায় হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে তিন সাংবাদিকসহ আওয়ামী লীগের ১১৪ জনের নাম উল্লেখসহ ১০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা হয়েছে। বাদী সাইফুর রহমান মন্ডল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নারিচাগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
মামলায় আসামি হওয়া পেশাদার তিন সাংবাদিক হলেন-দৈনিক সংবাদের বগুড়া প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন মিন্টু (৭১ নম্বর), দৈনিক কালের কণ্ঠের ফটো সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ ঠান্ডা (৭৪ নম্বর) এবং দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ জেলা প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম দয়া (১১১ নম্বর)। গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বগুড়া শহরের কামারগাড়ি এলাকায় কলেজ ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনায় এজাহারে তাদের নাম রয়েছে। তবে বাদী সাইফুর রহমান মন্ডল দাবি করেছেন, তার ছেলে ভিকটিম কেএম নুরুল্লাহ মন্ডলের শনাক্ত অনুসারে তাদের আসামি করা হয়েছে। এনিয়ে বগুড়া জেলায় ২২জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হলো।
সবশেষ মামলায় নজরুল ইসলাম দয়ার নাম ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। তিনি উল্লেখিত ১৮ জুলাই ঘটনার দিন শয্যায় ছিলেন। জুন মাসে সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দুইমাস পায়ে ভর দিয়ে হাঁটতে পারতেন না। অনেকটা পঙ্গু অবস্থায় থাকা সাংবাদিককে মামলার বিবরণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দেখানো হয়েছে। তাকে ফাঁসানোর নেপথ্যে পেশাগত বিরোধের জের রয়েছে মন্তব্য করেন সাংবাদিক নেতারা। পুলিশ বলছে, তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উদ্বেগ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রবীণ সাংবাদিক মহসিন আলী রাজু বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়ে নজরুলের ওপর নন্দীগ্রাম থানার মধ্যে হামলা করেছিল ক্ষমতাসীনদের লোকজন। তার বাবা শ্রমিকদল নেতা আব্দুর রাজ্জাকের নামে একাধিক নাশকতা মামলা দিয়েছে। নজরুলের ওপর বেশ কয়েকদফা হামলাসহ একযুগে অন্তত সাতবার এলাকায় ঢুকতে দেয়নি লীগাররা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল। নিরপেক্ষ পেশাদার সাংবাদিক হয়রানি ও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে। ঘটনাগুলোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।
এ প্রসঙ্গে বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. জেদান আল মুসা পিপিএম বলেন, মামলায় যেন সাংবাদিক হয়রানি না হন, সে ব্যাপারে নজর রাখবে পুলিশ। তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
        
                            
                                    
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
                                    
                                    
                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                            
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন