পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হামিদুল আলম মিলন প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বগুড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২–এ হাজির হয়ে সাবেক ডিআইজি মিলন জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক মেহেদী হাসান তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
হামিদুল আলম মিলনের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতারণা মামলা নং ২১৭৩/২৫–এর (ধারা ৪০৬/৪২০/১০৯) অধীনে এই আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা জানায়, অভিযোগের প্রাথমিক ভিত্তি নিশ্চিত হওয়ার পরই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বর্তমানে মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং পরবর্তী বিচারিক কার্যক্রমও প্রক্রিয়াধীন।
সারিয়াকান্দী উপজেলার বাসিন্দা হামিদুল আলম মিলন প্রায় চার দশকের পুলিশ ক্যারিয়ারে মহানগর, রেঞ্জ ও পুলিশ সদর দপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্বশীল পদে অভিজ্ঞতা থাকলেও তার পেশাগত জীবনে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। সেই সময় জানানো হয়—২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে থাকলেও তিনি বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দী–সোনাতলা) আসনে তার স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় সরাসরি অংশ নেন। অভিযোগ ছিল, তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয় করে প্রচারণার কৌশল নির্ধারণে সক্রিয় ছিলেন। পুলিশ সদর দপ্তরের ডিসিপ্লিন উইং তদন্ত শুরু করলে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। তবে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত না করে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
অবসরের দুই মাস পরই তার বিরুদ্ধে নতুন করে প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার এবং আদালতের নির্দেশে কারাগারে প্রেরণকে সংশ্লিষ্টরা তার ‘বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা’ হিসেবে মূল্যায়ন করছেন।
আইনজীবীরা বলছেন, দীর্ঘদিনের অভিযোগ ও আলোচিত ঘটনাগুলোর পর এবার আইনি দায়বদ্ধতার মধ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়া অগ্রসর হচ্ছে। অভিযোগের সারবত্তা যাচাই-বাছাই চলমান রয়েছে। প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
অন্যদিকে, আদালতে তার জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় মামলার বিচারিক অগ্রগতি আরও দ্রুত এগোবে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।



