ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সময়মতো চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে কর্তব্যরত এক নার্সকে মারধর করেছে রোগীর স্বজনরা।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নার্স সেলিনা সুলতানার মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের জরিনা বেগম শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন দুপুরে ডিউটিতে থাকা নার্স সেলিনা অন্য এক রোগীকে সেবা দেওয়ার পর জরিনাকে ইনজেকশন দেওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ সময় জরিনার ছেলে রায়হান (২৪) অভিযোগ করেন, সেবা দিতে দেরি হচ্ছে। এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটির জেরে রায়হানসহ স্বজনরা নার্স সেলিনার ওপর হামলা চালান। এতে তার মাথা ফেটে যায়। হামলার সময় হাসপাতালের প্রায় ৫০ হাজার টাকার আসবাব ও সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. তামিম রায়হান বলেন, ‘নার্স একজন রোগীকে সেবা দেওয়ার পরই জরিনাকে ইনজেকশন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এতেই রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর হামলা চালায়। এতে নার্স সেলিনার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং সেলাই দিতে হয়েছে।’
এ বিষয়ে রোগী জরিনা ও তার স্বজনদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
শফিকুল ইসলাম শরিফসহ একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবার মান খুবই খারাপ। বিশেষ করে নার্সদের খারাপ ব্যবহারের কারণেই অনেক সময় তর্ক-বিতর্কের ঘটনা থেকে হাতাহাতির মতো ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরবর্তীতে তারাই আবার চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ছাড়াও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে অন্যত্র রেফার করে দেওয়া হয়। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পৌরসভাসহ ২১টি ইউনিয়নের রোগীদের। এ সমস্যা থেকে মুক্তি চাই নবীনগরবাসী।
এ ঘটনার পরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করে। থানার ওসি শাহীনূর ইসলাম জানান, ‘আরএমও বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন