চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবস্থিত চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে। পোস্টটি নজরে আসার পরপরই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সন্দেহজনক ওই পোস্টে দাবি করা হয়, চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
তবে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।
উল্লেখ্য, চন্দ্রনাথ পাহাড়ে অবস্থিত বিভিন্ন মন্দির উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান হিসেবে পরিগণিত। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা নিয়মিতভাবে এ তীর্থস্থানে পূজা-অর্চনা ও দর্শনের উদ্দেশ্যে আগমন করেন।
সীতাকুণ্ড দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। এখানে সব ধর্মাবলম্বী মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে আসছেন। চন্দ্রনাথ মন্দির ও আশপাশের এলাকা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ও আবেগঘন স্থান হিসেবে বিবেচিত, এবং এ স্থানের প্রতি স্থানীয় জনগণের রয়েছে গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান।
রোববার (১৭ আগস্ট) উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরেজমিনে চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনে মসজিদ নির্মাণের কোনো কার্যক্রম কিংবা প্রস্তুতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কেউ সেখানে মসজিদ নির্মাণে এগিয়েও আসেনি।
উপজেলা প্রশাসন সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আশ্বস্ত করেছে যে, চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি, ভবিষ্যতেও এমন কোনো অনুমতি দেওয়া হবে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব, প্রোপাগান্ডা বা অপপ্রচারের মাধ্যমে সীতাকুণ্ডের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের যেকোনো অপচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সবাইকে অনুরোধ করব, আমাদের সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন। ধর্ম-বর্ণের ভিন্নতা যেন বিভেদের কারণ না হয়ে বরং ভালোবাসা ও সহমর্মিতার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। আসুন, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের এক সুন্দর উদাহরণ গড়ে তুলি। আমরা সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে অঙ্গীকারবদ্ধ।’