কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে এক গৃহবধূকে হাত বেঁধে নির্মমভাবে মারধর করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্য। পরে স্থানীয়ভাবে বসানো সালিশে ওই গৃহবধূর স্বামীর সঙ্গে ‘তালাক’ ঘটিয়ে তাকে স্থানীয় যুবদল নেতার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে নির্যাতনের ঘটনা ও শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সালিশের মাধ্যমে বিয়ের ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনার ভিডিও মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হলেন শ্রীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. বজলুর রহমান, আর যুবদল নেতা হলেন একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি বিল্লাল হোসেন। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ইউপি সদস্যের ভাতিজার স্ত্রী এবং তার স্বামী প্রবাসে রয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া দুই মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ইউপি সদস্য বজলুর রহমান ওই নারীকে হাত বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করছেন। এ সময় গৃহবধূ চিৎকার করে ‘মা, মা’ বলে সাহায্য চাইছেন। ভিডিওতে যুবদল নেতা বিল্লাল হোসেনকে পাশেই বসে থাকতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য বজলুর রহমান বলেন, ‘ওই নারী আমার ভাতিজার স্ত্রী। স্থানীয়রা তাকে বিল্লাল মিয়ার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন। পরে আমি গিয়ে কয়েকটি আঘাত করি। পরের দিন স্থানীয় সালিশে ৫ লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিল্লাল হোসেন বিবাহিত, তার সংসারে স্ত্রী ও চার কন্যা সন্তান রয়েছে। অপরদিকে, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূও দুই সন্তানের জননী।
বিল্লাল হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঘটনাটি বৃহস্পতিবারের। তবে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। গৃহবধূর স্বামী প্রবাসে থাকেন, আর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর নবদম্পতি অজ্ঞাতস্থানে চলে গেছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন