ঢাকা রবিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৫

ফুলবাড়ীতে পাটের ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২৫, ০১:০৩ পিএম
ফুলবাড়ীতে পাটের আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি পাটচাষিরা, আগ্রহ বাড়ছে অন্যদেরও। ছবি- রূপালী বাংলাদেশে

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পাটের আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি পাটচাষিরা, আগ্রহ বাড়ছে অন্যদেরও। বিগত বছরগুলোতে চাহিদানুযায়ী দাম না পাওয়া, পানির অভাবে জাগ দেওয়া নিয়ে বিড়ম্বনাসহ ভালো বীজের সংকট ইত্যাদি কারণে ফুলবাড়ীতে পাটের আবাদ কমে আসলেও এবছর সুদিন ফিরেছে সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের।

গত কয়েক বছর পাটের দাম আশানুরূপ না হাওয়ায় হতাশায় পড়েন চাষিরা। কিন্তু এবছর উৎপাদন ভালো হওয়াসহ উৎপাদিত পাটের দাম আশানুরূপ পাওয়ায় আগ্রহ ফিরেছে এলাকার কমবেশি সব চাষিরই। পাটের বাজার এ অবস্থা বজায় থাকলে আগামীতে অন্যান্য ফসলের সঙ্গে পাটেরও আবাদ অনেক বাড়বে- এমনটাই মনে করছেন উপজেলা কৃষি দপ্তর ও চাষিরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬০ হেক্টর। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রতি হেক্টর জমিতে ১১ দশমিক ৯৩ বেল হিসেবে মোট ৭১০ বেল।

জানা যায়, গত কয়েক বছর প্রতিমণ পাটের দাম ছিল প্রকার ও মানভেদে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এবছর সেই পাট বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৮০০ থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে ফুলবাড়ী উপজেলায় পাটের বেচাকেনার জন্য কোনো বাজার না থাকায় কৃষকদের পাট বিক্রি করতে যেতে হচ্ছে পার্শ্ববর্তী বিরামপুর উপজেলায়। এতে কৃষকদের উৎপাদিত পাট নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিগত বছরগুলোতে চাহিদানুযায়ী পাটের দাম না পাওয়ায় উৎপাদন খরচও ওঠাতে পারতেন না চাষিরা। এরপরও অনেক চাষি জমির উর্বরতা ধরে রাখতে পাট চাষ করতেন। অনেকে পাট চাষ ছেড়ে দিয়ে অন্য ফসলে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু এবছর বাজারে পাটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পাটের দাম আশানুরূপ পেয়েছেন। পাটের দাম ভালো পাওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি হিসেবে পাটখড়ির দামও পাচ্ছেন আশানুরূপ। বর্তমানে প্রতিমণ পাটখড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে বাড়তি লাভ পাচ্ছেন পাটচাষিরা। এসব কারণে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও আবার আগ্রহী হয়ে উঠেছেন পাট চাষে।

উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামের পাটচাষি নজরুল ইসরাম, মাহাবুর রহমান ও আজিজুল হক জানান, এবছর পাটের ভালো দাম পেয়েছেন। তবে ফুলবাড়ী উপজেলায় পাট ক্রয়ের কোনো আড়ৎ কিংবা ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় পাট বিক্রি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। উৎপাদিত পাট বিক্রি করতে যেতে হচ্ছে পার্শ্ববর্তী বিরামপুর উপজেলায়। এতে অর্থ, সময় ও ভোগান্তি সবগুলো পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. শাহানুর রহমান বলেন, পাট খুবই সম্ভাবনাময় একটি ফসল। অতিতে ব্যাপকভাবে পাট আবাদ হলেও নানা কারণে এর আবাদ কমে এসেছে। তবে এবছর পাটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন। উপজেলায় পাটের আবাদ বাড়াতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রণোদনার আওতায় ২০ বিঘা জমিতে পাট চাষের জন্য ২০ জন কৃষকের মাঝে উন্নতমানের পাট বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।