ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫

‘আমি কাঞ্চন, একটা মার্ডার করেছি, আরও ১০০টা মার্ডার করব’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২৫, ১১:৩৬ এএম
রকি হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাঞ্চন। ছবি- সংগৃহীত

‘আমি পূর্বপাড়ার কাঞ্চন, একটা মার্ডার করেছি, আরও ১০০টা মার্ডার করব।’—এভাবেই প্রকাশ্য ভিডিওবার্তায় হুমকি দেন গাইবান্ধার আলোচিত রকি হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাঞ্চন।

বুধবার (২ জুলাই) রাতে ‘শাওন জামান’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ইংরেজি উপশিরোনামসহ ভিডিওটি পোস্ট হলে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

অভিযুক্ত কাঞ্চনের পুরো নাম মো. কাঞ্চন মিয়া। তিনি গাইবান্ধা শহরের পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় নওয়াব আলীর ছেলে। তিনি ২০২১ সালের ১১ জুলাই ফুলছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রকি হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি।

ভাইরাল ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে হাইকোর্ট বিভাগের এক আইনজীবী অভিযোগ করেন, কাঞ্চনের সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণে তাঁর পরিবার বারবার হুমকি ও হামলার শিকার হচ্ছে। তিনি জানান, পূর্বপাড়ায় তাঁদের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুর করা হয় এবং একইসঙ্গে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

৪৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে কাঞ্চন নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমি একটি মার্ডার করেছি, প্রয়োজনে আরও ১০০টা করব।’ আইনজীবীর ভাষ্য অনুযায়ী, কাঞ্চন একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং একাধিকবার তাঁদের বাড়িতে অস্ত্রসহ হামলা চালিয়েছেন।

আইনজীবী আরও অভিযোগ করেন, বারবার থানায় জানালেও কাঞ্চনের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। সর্বশেষ বুধবার রাতে থানায় করা সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) থানার পুলিশ কেবল ‘অভিযোগ’ হিসেবে রেকর্ড করেছে।

আতঙ্কিত আইনজীবী পোস্টে লিখেছেন, ‘এটা কি সেই নতুন বাংলাদেশ, যেখানে হত্যা মামলার আসামি প্রকাশ্যে ভিডিওবার্তা দিয়ে আইনজীবীর পরিবারকে হুমকি দেয় আর প্রশাসন চুপ থাকে?’ তিনি দ্রুত বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম জানান, প্রাচীর ভাঙচুর ও হুমকির ঘটনায় রাতেই একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার নিশাত এঞ্জেলা বলেন, ভিডিওটি এখনও দেখিনি। তদন্ত করে দেখা হবে। যদি পুলিশের গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। একদিকে আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, অন্যদিকে একজন হত্যা মামলার আসামির এমন প্রকাশ্য ঔদ্ধত্য—সব মিলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।