যশোর সদর উপজেলার ইছালী ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের স্কুলছাত্রী নাদিরা আক্তারকে হত্যা, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে। নাদিরার মা শিল্পী বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেছেন। এতে নাদিরার প্রেমিকসহ মোট চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন- রামকৃষ্ণপুর গ্রামের নাছির মোল্লা ও তার দুই ছেলে নাজমুল হোসেন এবং ট্যাপা হোসেন। এছাড়া নজরুল মোল্লার ছেলে মিরাজুল ইসলাম।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, নাদিরার বাবা মকতুল হোসেন কুয়েত প্রবাসী। মা শিল্পী বেগম একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। নাদিরা আক্তার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। আসামিরা সবাই তাদের প্রতিবেশী।
স্কুলে যাতায়াতের পথে আসামি নাজমুল প্রায়ই নাদিরাকে উত্ত্যক্ত করত এবং কুপ্রস্তাব দিত। নাদিরা প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে নাজমুল ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র শুরু করে। একপর্যায়ে নাজমুলের প্রেমে জড়িয়ে পড়ে নাদিরা। তাদের মধ্যে নিয়মিত মোবাইলে কথাবার্তা হতো।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নাজমুল নাদিরার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সেই দৃশ্য গোপনে মোবাইলে ধারণ করে। পরে ভিডিও দেখিয়ে নানাভাবে নাদিরাকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। বিয়ের জন্য চাপ দিলে নাজমুল তাকে ‘চরিত্রহীন’ বলে অপবাদ দেয়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে নাদিরা।
গত ৮ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে নাদিরা ঘর থেকে বের হন। খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্বজনরা জানতে পারেন, নাজমুলের বসতবাড়ির সামনের একটি আমগাছে নাদিরার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়।
৯ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত শেষে নাদিরার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে মা শিল্পী বেগম শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন। তিনি মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফারুক আহমেদ বলেন, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে নিহত নাদিরার মা শিল্পী বেগম বাদী হয়ে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন