পার্বত্য খাগড়াছড়িতে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক আলবাট্রস ট্রেইল ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাহাড়ের আঁকাবাকা মেঠো পথ, উঁচু-নিচু পাহাড়, চেঙ্গী নদীর বালুচর, অরণ্যের ঘন বনভূমি এবং পাহাড়ি গ্রামের মধ্য দিয়ে দৌড় হওয়ায় এ ম্যারাথন দর্শক ও অংশগ্রহণকারীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের জন্য এটি একটি নতুন উদ্যোগ, যা আয়োজন করেছে রান বাংলাদেশ। খাগড়াছড়ি কংচাইরী পাড়ার মায়াবিনী পর্যটন লেকে দু'দিনব্যাপী ম্যারাথন গত শনিবার ভোরে সূচনা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৭৫০ জন আবেদনকারী থেকে বাছাই করে ১৫০ জন নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণকারীর নাম চূড়ান্ত করা হয়।
ম্যারাথনটি তিনটি ভিন্ন দূরত্বে অনুষ্ঠিত হয়-৩৩ কিলোমিটার, ৫০ কিলোমিটার ও ৮৩ কিলোমিটার। প্রতিযোগিতায় ৩৩ কিলোমিটার দৌড়ে প্রথম হয়েছেন রাকিবুল হাসান, ২য় হয়েছেন মো. মাসুদুল হক, ৩য় হয়েছে সৈকত মো. রেজুনাল হক। মহিলা থেকে প্রথম হয়েছে মুবি সুত্রাধর, ২য় হয়েছে আয়েশা নওয়ার।
৫০ কিলোমিটার দৌড়ে প্রথম হয়েছেন মাসুদ রানা, ২য় হয়েছেন আবু সুফান, ৩য় হয়েছেন অহিদুল ইসলাম, মহিলা থেকে প্রথম হয়েছে পারুল দাশ, ২য় হয়েছে মৌসুমি আক্তার।
এবং ৮৩ কিলোমিটার দৌড়ে প্রথম হয়েছেন মো. সাজ্জাদ হোসেন, ২য় হয়েছেন মো. সাজ্জাদুল হোসেন, ৩য় হয়েছেন মো. লুতফুর রহমান।
অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, অন্যান্য ম্যারাথনের তুলনায় এ দৌড়ের আনন্দ ও অভিজ্ঞতা অনন্য। পাহাড়ি পথ, অরণ্যের আলো-ছায়া ও স্থানীয় পরিবেশে দৌড় দিয়ে সত্যিই নতুন কিছু শিখেছি।
রান বাংলাদেশ ফাউন্ডার ও রেস ডিরেক্টর মরিময় তাবাসুম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি মানুষের জীবনযাপন, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সৌন্দর্য বিশ্বের কাছে তুলে ধরা এই ম্যারাথনের মূল উদ্দেশ্য। স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের মেলবন্ধন এবং পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করাও আমাদের লক্ষ্য।
ইভেন্ট ডিরেক্টর সাজনান মোহাম্মদ বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রেইল ম্যারাথন। তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোর ৫টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টায় শেষ হয়েছে। ১৫০ জন অংশগ্রহণকারী দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে এসেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ধরনের আয়োজন শুধু দৌড়বিদদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা নয়, বরং প্রত্যন্ত এলাকার মানুষদেরও উৎসাহিত করছে অংশগ্রহণের জন্য। পাশাপাশি এটি পাহাড়ি অঞ্চলের সৌন্দর্য, সংস্কৃতি ও সম্ভাবনা তুলে ধরার মাধ্যমে পর্যটন ও সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি করবে।


