ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫

প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২-এর প্রসঙ্গ: পরীক্ষা বাতিল, তদন্ত কমিটি গঠন

খুলনা ব্যুরো
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৫, ১১:২৪ পিএম
সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা। ছবি- সংগৃহীত

খুলনার সরকারি বিএল কলেজে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্নপত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি নিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

বিতর্কিত প্রশ্নটি পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর পরপরই বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তৎক্ষণাৎ প্রশ্নপত্রটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় এবং পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে কলেজ প্রশাসন।

প্রশ্নপত্র প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিত্য রঞ্জন সরকারকে শোকজ করা হয়েছে।

জানা গেছে, বুধবার দুপুর ২টায় একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সমাজবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একাডেমিক ভবন-১-এ নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরু হলেও প্রশ্নপত্রের ক্রম এলোমেলো ছিল—প্রথমে ৫, তারপর ৬, পরে ১, এরপর ২, ৩ ইত্যাদি।

সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন ছিল ৯ নম্বর, যেখানে লেখা ছিল- ‘জনাব রিয়াজ তার নাতনিকে নিয়ে ধানমন্ডির ৩২নং বাড়ি পরিদর্শনে যান। সেখানে একজন মহান নেতার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, এই ছবিটি আমাদের সেই প্রিয় নেতার, যিনি ১৯৬৬ সালে কিছু দাবি পেশ করেছিলেন।

আর এগুলো ছিল আমাদের প্রাণের দাবি, প্রত্যাশিত স্বপ্ন পূরণের চাবিকাঠি। পরবর্তীতে এ দাবিগুলো মুক্তিকামী জনতার মধ্যে গভীর উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।’ এই উদ্দীপকের ভিত্তিতে চারটি প্রশ্ন করা হয়েছিল।

বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও পরীক্ষা কক্ষ পরিদর্শক শেখ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশ্নপত্রের সিরিয়াল ও ভেতরের বিষয়বস্তু দেখে আমি সঙ্গে সঙ্গে অধ্যক্ষকে জানাই। পরে তার নির্দেশে প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করে প্রশাসনে জমা দিই।’

বিএল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘৯ নম্বর প্রশ্ন ছাড়াও ৪, ৭, ৯ ও ১১ নম্বর প্রশ্নেও গড়মিল ছিল। প্রশ্নে দেওয়া উদ্দীপক ও প্রশ্নের মধ্যে সংগতির অভাব ছিল। এমন একটি প্রশ্ন কীভাবে প্রশ্নপত্রে অন্তর্ভুক্ত হলো, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, ‘বিএল কলেজের প্রশ্ন অনেক কলেজ অনুসরণ করে, এমনকি টেস্ট পেপারেও ছাপা হয়। তাই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রের কিছু নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে, বাকিগুলো নষ্ট করা হয়েছে।’

ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে সহকারী অধ্যাপক নিত্য রঞ্জন সরকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।