সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ১২:২২ পিএম

চরমপন্থিদের হাতে মাহবুব খুন, পরিকল্পনা হয়েছিল কারাগারে বসেই

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ১২:২২ পিএম

খুলনায় নিহত সাবেক যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান। ছবি- সংগৃহীত

খুলনায় নিহত সাবেক যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান। ছবি- সংগৃহীত

খুলনায় সাবেক যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর সেই পরিকল্পনার ছক কষা হয়েছিল কারাগারে বসেই। আধিপত্য বিস্তার, মামলা ও ভুল বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় চরমপন্থি গ্রুপের দ্বন্দ্বই এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ বলে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তও করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মাহবুব হত্যায় ব্যবহৃত হয় একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র। তিনজন দুর্বৃত্ত একটি মোটরসাইকেলে এসে গুলি করে ও রগ কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় তেলিগাতি এলাকা দিয়ে।

ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ চলছে। অভিযুক্তদের ধরতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে সজল নামের এক দোকানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি মাহবুবের অবস্থান খুনিদের জানিয়ে দিয়েছিলেন।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ জানান, ‘প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে সব বলা যাচ্ছে না। তবে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং একাধিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে।’

স্থানীয় সূত্র বলছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মাহবুব ছিলেন সরব। সেই সময় এক বিএনপি নেতা গা ঢাকা দিয়ে মাহবুবের বাড়িতে অবস্থান নেন। এতে করে দলের মধ্যে বেশকিছু নেতার সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পাশাপাশি জমি বিক্রির সিন্ডিকেট, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজির বিরোধে স্থানীয় সন্ত্রাসী চক্রদের সঙ্গে মাহবুবের দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে।

মাহবুবের খালাতো ভাই আরমান নিজেও এক উঠতি চরমপন্থি দলের নেতা ছিলেন। তিনি বর্তমানে কারাগারে। অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ গ্রুপের হুমায়ুন কবির (হুমা), রায়হান, আসিফ ও ইমন নামে কয়েকজন চরমপন্থি কিছুদিন আগে বাগেরহাটে একটি কিলিং মিশনের সময় ধরা পড়ে। তাদের মধ্যে হুমা ও আসিফ এখনো কারাগারে।

মাহবুবের স্ত্রী এরিন সুলতানা বলেন, ‘ওর বিরুদ্ধে মামলা বা গ্রেপ্তারের কোনো ভূমিকা ছিল না। তারপরও ওরা বিশ্বাস করেনি। ওরা শুনেছে, মাহবুব নাকি তাদের ধরিয়ে দিয়েছে। অথচ ও নিজেই বলেছে, এসব কিছুই জানত না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওর বিরুদ্ধে নানা হুমকি ছিল, কিন্তু কারা দিচ্ছে তা বলত না। কুয়েটের ঘটনায়ও সে দলের নির্দেশে গিয়েছিল। নিজের ইচ্ছায় নয়। এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

মাহবুবের রাজনৈতিক সহকর্মী এক তাঁতী দলের নেতা বলেন, ‘প্রথমে আমাকেই টার্গেট করা হয়েছিল, কারণ আমি এক মামলার বাদী ছিলাম। আমার বাসায় এসে অস্ত্র ঠেকিয়ে হুমকি দেয় ওরা। পরে লক্ষ্য বদলে মাহবুবকে খুন করে।’

তিনি আরও বলেন, আমি এখন এদের ভয়ে এলাকার বাইরে যাই না। হুমা গ্রুপ মনে করত, মাহবুব তাদের ধরিয়ে দিয়েছে। মাহবুব বারবার বুঝিয়েছিল, এটা ভুল বোঝাবুঝি। কিন্তু তারপরও কারাগার থেকেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও রাজনৈতিক সূত্র জানা যায়, চরমপন্থিদের দৌরাত্ম্যে খুলনার দৌলতপুর, তেলিগাতি ও মহেশ্বরপাশা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গোলাম রব্বানী টিপু হত্যার পর এলাকায় আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে বিভিন্ন চরমপন্থি গ্রুপ। নিজেদের মধ্যে আস্থা ও নেতৃত্বের সংকটে বিভক্ত হয়ে পড়ে তারা।

মাহবুব এসব গ্রুপের রোষানলে পড়েন মূলত জমি ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে। তার ব্যবহৃত প্রাইভেট কারও নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার কাছ থেকে তা দখল করে নিয়েছেন বলে শোনা গেলেও মাহবুবের ঘনিষ্ঠজনদের দাবি, গাড়িটি বন্ধক ছিল।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী বলেন, ‘আমরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত গ্রুপ সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছি। একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদেরও খুব শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।’

Shera Lather
Link copied!