ঢাকা শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সাংবাদিক বুলু নিজেই সেতু থেকে ঝাঁপ দেন: নৌ-পুলিশ

খুলনা ব্যুরো
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ১১:৪৭ পিএম
সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু খুলনার খানজাহান আলী (রূপসা) সেতু থেকে স্বেচ্ছায় ঝাঁপ দেন। সেতুর ওপর স্থাপিত দুটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে নিয়োজিত খুলনা নৌ-পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে সেতুর সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হয়।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় রূপসা সেতুর দুই নম্বর পিলারের পাইলক্যাপের ওপর থেকে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সেটি সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মৃতদেহ হিসেবে শনাক্ত করা হয়।

এ ঘটনায় বুলুর ভাই আনিসুজ্জামান দুলু খুলনা নগরীর লবণচরা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় রূপসা নৌ-পুলিশ ফাঁড়িকে।

খুলনা অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, তদন্তের অংশ হিসেবে সেতুর ওপর স্থাপিত দুটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩১ আগস্ট দুপুর ২টা ২০ মিনিটে সাংবাদিক বুলু নিজেই সেতুর ওপর থেকে ঝাঁপ দেন।

তিনি নদীতে না পড়ে সরাসরি সেতুর নিচে কংক্রিটের পাইলক্যাপের ওপর পড়েন, ফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। প্রায় ৬০ ফুট উঁচু থেকে পড়ে তার চোয়াল, হাত ও পা ভেঙে যায়। ইতোমধ্যে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে এবং রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ভিসেরা নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

সাংবাদিক বুলু দৈনিক বঙ্গবাণী, আজকের কাগজ, চ্যানেল ওয়ান, ইউএনবি, দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ ও দৈনিক প্রবাহসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ-এ কর্মরত ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেস ক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, বুলুর প্রথম স্ত্রী এলিজা পারভীন লিজা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। গত ১১ মে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। এর পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বুলু। পরে তিনি তানিয়া সুলতানা নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। তবে আর্থিক নানা বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও তার মনোমালিন্য চলছিল।

পিবিআই খুলনার পরিদর্শক কাজী মোস্তাক আহমেদ জানান, গত ৩০ জুলাই তানিয়া সুলতানা সাংবাদিক বুলুর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ নম্বর আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেন। পরবর্তীতে ২৬ আগস্ট তানিয়া সুলতানা পিবিআই কার্যালয়ে এসে উভয়ের মধ্যে মীমাংসার একটি আপসনামা জমা দেন।