ঢাকা বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫

টাকা-পানি-খাবার দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশ-ইন’ করে বিএসএফ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
কু‌ড়িগ্রা‌মের রৌমারী সীমান্তে দিয়ে ১৪ জনকে পুশ-ইন করে বিএসএফ। ছবি-সংগৃহীত

কু‌ড়িগ্রা‌মের রৌমারী সীমান্ত দিয়ে ১৪ জনকে বাংলাদেশে ‘পুশ-ইন’ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। 

মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোর রাত ৪টার দি‌কে উপ‌জেলার বড়াইবা‌ড়ি সীমা‌ন্তে ১০৬৭ সীমানা পিলা‌রের নো-ম‌্যান্স ল‌্যা‌ন্ড এলাকা দিয়ে তাদের ঠেলে পাঠানো হয়। ওই ১৪ জনের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী।

বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া ব্যক্তিরা জানান, তারা ভারতের আসামের বা‌সিন্দা। ঠেলে পাঠানোর সময় তাদের প্রত্যেকের হাতে বাংলাদেশি ২০০ টাকা, একটি পানির বোতল ও খাবারের প্যাকেট ধরিয়ে দেয় বিএসএফ। পরে তাদের জোরপূর্বক ঠেলে এপাশে পাঠানো হয়। কেউ আসতে না চাইলে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।

পুশ-ইনের শিকার খায়রুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আসামের মিকিরভিটায় আমাদের মাটি (জমি) আছে, ঘরবাড়ি আছে। আমি সেখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। আমার মা-বাবা সেখানের আদি বাসিন্দা। আমার বড় ভাই ও মা সেখানকার ওয়ার্ড মেম্বার।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৩ মে আমাকে এসপি অফিসে তুলে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে ভারতের গোয়ালপাড়া জেলার মাটিয়া ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়। গতকাল (সোমবার) ওই ক্যাম্প থেকে ফজরের নামাজের আগে কাঁটাতার পার করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।’

‘সীমান্তে পাঠানোর আগে আমার সাথি ভাই-বোনদের সবার হাতে ২০০ টাকা, পানির বোতল ও প্যাকেট খাবার দেওয়া হয়। কেউ আসতে রাজি না হলে মারধর করে।’

স্থানীয় ও একা‌ধিক সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে পুশ-ইনকে কেন্দ্র ক‌রে বি‌জি‌বি-বিএসএফের ম‌ধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে পুশ-ইন ঠেকাতে এলাকাবাসী ও বিজিবি সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নিলে বিএসএফ চারটি গুলি করে। 

এ ছাড়া দুপু‌রে বি‌জি‌বির পক্ষ থে‌কে পতাকা বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হ‌লেও বিএসএফ রা‌জি হয়‌নি। উল্টো বাংলাদেশের আকা‌শে ড্রোন ওড়া‌নো, সীমান্তে ভা‌রী অস্ত্র তাক করিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে।

ত‌বে বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্তে পুশ-ইনের চেষ্টার ঘটনায় উত্তেজনার কথা স্বীকার করা হলেও গুলির কথা অস্বীকার করেছে। জামালপুর ৩৫ বি‌জি‌বি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (সিও) হাসানুর রহমান বলেন, ‘পতাকা বৈঠকের কথা থাকলেও সে‌টি হয়‌নি। আটক ১৪ জনকে বড়াইবা‌ড়ী ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। তারা মূলত কোন দে‌শের নাগ‌রিক সেটা যাচাই–বাছাই ক‌রে পরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’