ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

চাকরির বয়স ৬৫ করার আবদার সাবমেরিনের ডিজিএমের

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৫, ০৬:৪১ এএম
বিএসসিপিএলসি । ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিপিএলসি) উপ-মহাব্যবস্থাপকেরা (ডিজিএম) চাকরির বয়সসীমা ৬০ থেকে ৬৫ বছরে উন্নীতের আবদার জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সচিব বরাবর আবেদন করেছেন।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে না জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব বরাবর সরাসরি আবেদন করে চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছর করার পাঁয়তারা করছেন তারা। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পরবর্তী বোর্ড সভায় উপস্থাপনেরও নির্দেশ দিয়েছেন রুটিন দায়িত্বে বিভাগের সচিব পদে থাকা মো. জহিরুল ইসলাম।

তিনিই আবার পদাধিকারবলে বিএসসিপিএলসির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান। ফলে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এড়িয়ে চেয়ারম্যান বরাবর সরাসরি আবেদনে ‘চেইন অব কমান্ড’ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মত কর্মকর্তাদের একাংশের।

সূত্র বলছে, প্রচলিত বয়সসীমা অনুযায়ী, ঊর্ধ্বতন একাধিক ডিজিএম আগামী কয়েক বছরে তাদের অবসর ঠেকাতেই বয়সসীমা বাড়ানোর কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির (বিএসসিপিএলসি) পূর্বের চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের অবসরে যাওয়ার বয়স ছিল ৬৫ বছর। পরবর্তীতে সরকারি নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের অবসরে যাওয়ার বয়স ৬০ নির্ধারণ করা হয়। তবে রাজস্ব খাতভুক্ত কর্মকর্তাদের ন্যায় ৫৯ বছর বয়সে অবসর-উত্তর ছুটি ‘পিআরএল’-এ যাওয়ার নিয়ম চালু হয়নি এখনো। উক্ত পরিস্থিতিতে আগামী দুই-এক বছরের মধ্যে অবসরে যেতে পারেন এমন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বেই এই আবেদন করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উপ-মহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, ‘সব উপ-মহাব্যবস্থাপক মিলে যেহেতু আবেদনটি করেছেন, অনেকটা বাধ্য হয়েই তিনিও এই আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন।’ তবে আবেদনের বিষয়টি অত্যন্ত গোপনে সম্পন্ন করা হয়েছে এবং এই আবেদনের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী কাউকেই অবগত করা হয়নি। মানা হয়নি আবেদন করার যথাযথ প্রক্রিয়াও।

প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা মহাব্যবস্থাপকের (প্রশাসন ও অর্থ) কাউকেই না জানিয়ে এই আবেদন করেছেন তারা। নিয়ম অনুযায়ী সচিব বরাবর আবেদনের ক্ষেত্রে মাধ্যম হিসেবে ‘ব্যবস্থাপনা পরিচালক’ থাকার কথা থাকলেও, এ ক্ষেত্রে তাকে একেবারেই অন্ধকারে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।

তবে গতকাল মঙ্গলবার দিনভর চেষ্টা করেও বিএসসিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে উল্লেখিত নম্বরে ফোন করলে সেটি ‘ব্যস্ত’ দেখায়।

তবে প্রতিষ্ঠানটির একাধিক সূত্র বলছে, ডিজিএমরা শুধু আবেদন করেই থেমে থাকেননি, পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদে যেন বিষয়টি উত্থাপন করা হয় তার জন্য শুরু করেছেন তদবির। তদবিরে তারা সফলও হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বিষয়টি পর্ষদ সভায় উপস্থাপনের জন্য ব্যাপক চাপ তৈরি করেছেন।

পাশাপাশি বিষয়টি যেন অনুমোদন করা হয়, তার জন্য পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগও চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভাগের কোম্পানি অধিশাখা-২ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বিএসসিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পরবর্তী বোর্ড সভায় বিষয়টি উত্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়।