মেঘনা ও ভুলুয়া নদীতে জোয়ারের চাপে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের বয়ারচরের তেগাছিয়া বাজার এলাকার পুলিশ ফাঁড়ি ভেঙে খালে পড়েছে। হুমকিতে রয়েছে বাজারও।
মেঘনা ও ভুলুয়া নদীর তীব্র জোয়ারের চাপে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের বয়ারচরের তেগাছিয়া বাজারে অবস্থিত একটি পুলিশ ফাঁড়ি ভেঙে পড়েছে খালে। ভাঙনের মুখে রয়েছে তেগাছিয়া নামক একটি বাজারও।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ওই বাজারের ১৫টি দোকান খালে ভেঙে পড়েছে। রামগতি-বয়ারচর সড়কের তেগাছিয়া বাজার অংশ ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ নিজ উদ্যোগে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখেন।
বর্তমানে ওই বাজারের দুই শতাধিক ঘর মালিক ও ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন। বাজারের পশ্চিম পাশের গাবতলীর খালের অংশ ভাঙছে প্রতিনিয়ত। এভাবে চলতে থাকলে এক মাসের মধ্যেই বয়ারচরের গুরুত্বপূর্ণ বাজারটি বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয়রা জানায়, বয়ারচরের দক্ষিণে ভুলুয়া নদী আর পশ্চিমে মেঘনা নদী। দুই নদীর পানি চলাচলের জন্য মাঝখানে একটি বড় খাল রয়েছে, যা গাবতলী খাল নামে পরিচিত। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সব পানি ভুলুয়া নদী দিয়ে গাবতলীর খালে এসে মেঘনা নদীতে পড়ে। এতে গাবতলীর খালের তেগাছিয়া বাজার অংশে পানির স্রোতের চাপে তেগাছিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ঘর ভেঙে যায়। ভাঙতে শুরু করেছে বাজারও।
লক্ষ্মীপুর পাউবো কর্তৃপক্ষ ও রামগতির ইউএনও সরেজমিনে পরিদর্শন করে তেগাছিয়া বাজার রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে এর তিন মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি।
তেগাছিয়া বাজারের ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম, মো. নুরশাদ, ডাক্তার কামাল উদ্দিন ও সাবু ব্যাপারী জানান, তেগাছিয়া বাজারটি বয়ারচরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ছিল একটি পুলিশ ফাঁড়ি। আশপাশে প্রায় ২০ হাজার লোকের বসবাস।
মেঘনা ও ভুলুয়া নদীতে জোয়ারের তীব্র চাপে পুলিশ ফাঁড়ির ঘরটি ভেঙে যায়। পরে সেখান থেকে পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়। তারা বলেন, বাজারটি এখন মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় গুরুত্বপূর্ণ বাজারটি ভেঙে যাবে। তাই দ্রুত ব্লক দিয়ে বাজার রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।
চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) শেখ ফরিদ বলেন, মেঘনা ও ভুলুয়া নদীর পানির তীব্র স্রোতে গাবতলী খালের বিভিন্ন এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। গত তিন মাসে তেগাছিয়া বাজারের প্রায় ১৫০ ফুট ভেতরে পানি ঢুকে গেছে। এতে ওই বাজারের ১৫টি দোকান ভেঙে গেছে। বর্তমানে বাজারটি ভাঙনের মুখে। কিছুদিন আগে একটি পুলিশ ফাঁড়ি তলিয়ে গেছে খালে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে বলা হয়েছে। আশা করি দ্রুত কাজ শুরু হবে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সরেজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে ভাঙনরোধে কাজ করা হবে।