ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫

‘পাগলীর সন্তানের’ দত্তক নিতে আগ্রহী ১৫ জন

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৫, ০৪:১১ পিএম
নবজাতকটি সুস্থ আছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

এক পাগলীর রাস্তায় প্রসব করা কন্যাশিশুকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছে উল্লাপাড়া কেয়ার হাসপাতাল ও উপজেলা সমাজসেবা বিভাগ। সোমবার গভীর রাতে ওই নারী উল্লাপাড়ার শ্যামলীপাড়ায় কেয়ার হাসপাতালের পাশের গলিতে নিজেই একটি কন্যাশিশু প্রসব করেন।

কেয়ার হাসপাতালের মালিকদের একজন এবং ওই হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা ডা. লুৎফর রহমান জানান, সোমবার রাত দেড়টার দিকে তার হাসপাতালের পাশের গলিতে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো এক পাগলী একটি কন্যাসন্তান প্রসব করে। ওই সময়ে রাস্তায় চলাচলকারী দুই পথচারী বিষয়টি কেয়ার হাসপাতালকে জানান। এরপর হাসপাতালের সেবিকারা ওই গলিতে গিয়ে মায়ের নাড়ি কেটে নবজাতককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তারা পাগলীটিকেও হাসপাতালে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন, কিন্তু পাগলীটি অন্ধকারে ওই অবস্থায় পালিয়ে যায়। 

তিনি আরও জানান, পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ওই পাগলীকে পাওয়া যায়নি। রাত ২টার দিকে হাসপাতাল থেকে বিষয়টি উল্লাপাড়া থানা পুলিশ, সমাজসেবা বিভাগ ও মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে জানানো হয়। পরে রাতেই উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান এবং উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মোসা. নিলুফা ইয়াসমিন কেয়ার হাসপাতালে আসেন। তারা কন্যাশিশুটিকে আপাতত হাসপাতালে রেখে পরিচর্যার অনুরোধ করেন। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তারা উল্লাপাড়া উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। বর্তমানে এই কন্যাশিশুটিকে ১৫ ব্যক্তি দত্তক হিসেবে গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন। সমাজসেবা ও মহিলাবিষয়ক দপ্তর থেকে দত্তক গ্রহণকারীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডাকা হবে। এদের মধ্যে যার প্রকৃতই সন্তান প্রয়োজন, অথবা যিনি সুষ্ঠুভাবে এই কন্যাশিশুটিকে লালন-পালনের যোগ্য বিবেচিত হবেন তার হাতে প্রচলিত আইন অনুযায়ী শিশুটিকে তুলে দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, উপযুক্ত গ্রহীতা পেলে শিশুটি দত্তক দেওয়া হবে। অন্যথায় উপজেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে সদ্যোজাত শিশুটিকে রাজশাহী সরকারি বেবি হোমে পাঠানো হবে।