ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫

ধরলা নদীর ভাঙনে হুমকিতে ফসলি জমি

হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ১০:৫৫ পিএম
ধরলা নদীর ধারে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছন এক কৃষক। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

লালমনিরহাটে ধরলা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, আবাদি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেললেও ভাঙন থামছে না। ভাঙন প্রতিরোধকারী এই ব্যাগও নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। 

স্থানীয়দের দাবি, অস্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের চেষ্টা না করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ধরলা নদী। বর্তমানে নদীটিতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙন। নদীর দুই তীরে ভাঙনে ওই ইউনিয়নের শিবেরকুটি, বাসুরিয়া, কুরুল, ফলিমারীসহ ১০টি গ্রামের ফসলি জমি, বসতভিটা ও বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 

ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ওইসব গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর। নদীটির উভয় তীরে ১১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে এ ভাঙন। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে ভাঙনরোধে।

নদী পাড়ের বাসিন্দা শামসুর রহমান ও এনামুল হক বলেন, ‘নদীতে আমাদের বসতভিটা ও আবাদি জমি চলে গেছে। আমরা পাঁচবার করে বাড়ি সরিয়েছি। এখন সড়কের ধারে বসবাস করছি। ভাঙন থামে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করলেও পানির স্রোত আর বাতাসের কারণে অস্থায়ীভাবে এ কাজ কোনো ফল দিচ্ছে না। ফলে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওইসব গ্রামের ২০ হাজার মানুষ।’

দিন দিন ধরলা নদীর ভাঙন  বাড়ছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ধরলা পাড়ের বাসিন্দা হাজেরা বেওয়া আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই বাড়ে (এ বাড়িতে) দীর্ঘদিন থাইকা (থেকে) শুধু তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা শুনছি। হামাগো (আমাদের) জীবনের শেষ পর্যায়ে আইসা (এসে) গেল, কিন্তু কাজের বাস্তবায়ন দেখলাম না। সরকারের কাছে অনুরোধ, দ্রুত নদীখননের কাজ শুরু হউক। আমরা আর ত্রাণ চাই না, চাই স্থায়ী সমাধান। তাহলে আমাদের আবাদি জমি আর বসতবাড়ি ভাঙনের কবল থেকে বাঁচব।’

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার রায় বলেন, ‘ধরলা নদীর ভাঙনকবলিত ১১ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ীভাবে কাজের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলে আমরা কাজ শুরু করব।’

স্থায়ীভাবে ধরলা নদীর ভাঙনরোধ করে জমিজমা, বাড়িঘর ও স্থাপনা রক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।