ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

নির্ধারিত ক্লাসের সময়েও শিক্ষকশূন্য শ্রেণিকক্ষ, পাঠবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
৪৭ নং মিরেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গজারিয়া উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শৃঙ্খলা ও তদারকির অভাব দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা ও নিয়মশৃঙ্খলা উপেক্ষার কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে বঞ্চিত হচ্ছে সঠিক পাঠদান থেকে।

সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে এমনই এক চিত্র দেখা গেছে উপজেলার টেংগারচর ইউনিয়নের মিরেরগাঁও ৪৭নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

এ সময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষকরা হুড়োহুড়ি করে শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে শুরু করেন।

বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে কয়েকজন শিক্ষককে বসে থাকতে দেখা গেলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ডালিয়া আক্তার তখন উপস্থিত ছিলেন না।

শিক্ষার্থীরা জানায়, তিনি ‘ওয়াশরুমে’ গেছেন বলে জানানো হলেও প্রায় ২০ মিনিট অপেক্ষার পরও তাকে পাওয়া যায়নি।

পরে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি বিশেষ কাজে উত্তরশাহাপুরে অবস্থান করছেন।

শ্রেণিকক্ষে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা বিনা তত্ত্বাবধানে বসে আছে। রোলকল পর্যন্ত হয়নি।

তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী রূপালী বাংরাদেশকে জানায়, ‘দুপুর ১টা বেজে গেলেও আমাদের কোনো ক্লাস শুরু হয়নি।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় শিক্ষকরা হঠাৎই শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন এবং ঢোকার পরও বেশ কয়েকজন শিক্ষক মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসের সময় দুপুর ১২টা ১০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্ধারিত।

নিয়ম অনুযায়ী টিফিনের আগে অন্তত দুটি ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও কোনো ক্লাস হয়নি বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে।

এর আগেও এমন অভিযোগ উঠেছিল, তবে এবার সরেজমিনে গিয়ে তার প্রমাণ মিলেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ডালিয়া আক্তার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

এ সময় তিনি দাবি করে বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা অফিসের একজন কর্মকর্তা বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছিলেন, সে কারণে তারা অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিলেন।’

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন উল্টো। স্থানীয়রা জনান, কর্মকর্তা দুপুর ১২টার আগেই বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে চলে যান।

এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহানাজ পারভিন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছি। প্রাথমিক অবস্থায় কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ প্রস্তুত করেছি। ক্লাস চলাকালীন সময়ে কোনোভাবেই দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকা যাবে না। প্রতি মাসে মিটিংয়ে সচেতন করার পরও তারা এমন দায়িত্বহীন আচরণ করছেন, যা মেনে নেওয়া যায় না।’