ময়মনসিংহে নটরডেম কলেজে সংস্কার না হলে আত্মহত্যা হুমকি দিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন প্রতিষ্ঠানটির ১০ শিক্ষক। কলেজের পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফুন নাহার।
এর আগে, গত ২৯ ও ৩০ জুলাই কলেজে পদোন্নতি, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি এবং কোচিংয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে ১০ জন শিক্ষক পাঠদান বন্ধ রেখে ‘সংস্কার না হলে মৃত্যু’ হুমকি দিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। তারা কলেজ ফটকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। এ ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুৎফুন নাহার ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় তিনি ন্যায্য দাবি আলোচনার মাধ্যমে আদায়ের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষকদের সতর্ক করেন যাতে শিক্ষাকর্মে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না ঘটে।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে পাঠ কার্যক্রমে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
শিক্ষকদের অভিযোগ, বর্তমানে কলেজে প্রায় ৫০ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও ন্যায্য দাবির বিষয়ে সবাই একমত। যদিও অধিকাংশ শিক্ষক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চান, তবে ১০ জন শিক্ষক ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়ে চরমপন্থায় আন্দোলনে নামেন, যা ক্যাম্পাসে অস্থিরতা তৈরি করে।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও একাডেমিক কমিটির আহ্বায়ক ড. ফাদার থাদেউস হেম্ব্রম বলেন, ‘দুদিন ক্যাম্পাসে একটু উত্তেজনা ছিল, তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত। ক্লাস ও পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে চলছে। ১০ জন শিক্ষক দাবি আদায়ে চাপ সৃষ্টি করছেন। চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে অনেক দাবি মানা হয়েছে এবং আরও কিছু যৌক্তিক দাবি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে। তবে নীতিমালার বাইরে কোনো দাবি পূরণের সুযোগ নেই।’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ময়মনসিংহ নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিকারিকান্দা বাইপাস এলাকায় প্রতিষ্ঠিত নটরডেম কলেজে বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।