সাতক্ষীরার দেবহাটায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে কয়েকজন যুবক নিজেদের ‘সমন্বয়ক নেতা’ পরিচয় দিয়ে কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কর্মকর্তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। দাবি না মানলে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
ঘটনার খবর দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে, স্থানীয় খাদ্যবান্ধব ডিলার ও সাধারণ জনগণ কার্যালয়ে জড়ো হন। উত্তেজিত জনতার ধাওয়া খেয়ে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
অভিযুক্তর হলেন-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরার সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব নাজমুল হোসেন রনি, সদস্য আরিফ, আবু হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেবহাটার বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলান, সাবেক যুগ্ম আহ্বোয়ক মীর আরিফ, ইমরান হোসেন ও জুলাই আহত নাহিদ ইসলাম।
অফিস সহকারী নুরুল ইসলাম বলেন, কয়েকজন যুবক এসে অফিসারের খোঁজ করে। আমি বলি তিনি আসতে দেরি করবেন। তখন তারা হুমকি দেয়, অফিসার না এলে তালা ঝুলিয়ে দেবে। কিছুক্ষণ বসে থেকে হঠাৎ চলে যায়।
স্থানীয় ডিলাররা জানান, গত কয়েকদিন ধরে কিছু যুবক এসে ঝামেলা করছিল। আজ তারা তালা দিতে আসার খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই। তবে তারা ততক্ষণে পালিয়ে যায়।
নাজমুল হোসেন রনি দাবি করেন, তার মামাতো ভাইয়ের এক আত্মীয় ডিলারশিপ পেতে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ দেন উপজেলা খাদ্য অফিসারকে। তার কাছে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও রয়েছে বলেও দাবি করেন রনি।
তবে ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি অফিসারকে অনুরোধ করছেন টাকা নেওয়ার জন্য, কিন্তু অফিসার নিজে টাকা গ্রহণ করেননি। তিনি অন্য এক ব্যক্তিকে টাকা দিতে বলেন।
রনি আরও অভিযোগ করেন, ঘুষ-কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করায় সখিপুর এলাকায় সাতক্ষীরা মেডিকেলের 'দুর্নীতিবাজ' অফিসার মুরাদের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
দেবহাটা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শাহিনা খাতুন বলেন, আমি অফিসে না থাকার সময় কিছু যুবক এসে টাকা দাবি করে হুমকি দিয়েছে বলে শুনেছি। পরে কী হয়েছে, আমি জানি না।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলন সাহা বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।
সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল বলেন, রনি কয়েকদিন আগে এসে ঘুষের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। আমরা তাকে বলেছিলাম, উপযুক্ত প্রমাণ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আজকের ঘটনার মতো উত্তেজনা তৈরি করা ঠিক হয়নি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।