ঢাকা রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

পেটে সার্জিক্যাল যন্ত্র রেখে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন, প্রসূতির মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
ভেনাস হাসপাতাল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের সময় পেটে সার্জিক্যাল যন্ত্র রেখে এক প্রসূতিকে পরপর তিনবার অপারেশন করা হয়। এতে শান্তা (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের আহাজারিতে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ৪ লাখ টাকায় রফাদফা করা হয়েছে।

রোববার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর বলাশপুর এলাকায় মৃত ওই প্রসূতি নারীর জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহত নারী শান্তা (২০) নগরীর বলাশপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মোস্তাকীমের স্ত্রী।

এর আগে ওই দিন ভোরে নগরীর ভাটিকাশর ভেনাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা ওই প্রসূতি নারীর অবস্থা শঙ্কাজনক হলে তাকে তড়িঘড়ি কমিউনিটি বেইজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিবিএমসি) পাঠানো হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে নিহত নারীর স্বজনরা জানিয়েছেন।

নিহত নারীর স্বামী মো. মোস্তাকীম বলেন, ‘শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ভেনাস হাসপাতালে আমার প্রসূতি স্ত্রীকে ভর্তি করি। এরপর রাত ৮টার দিকে তার সিজার হয় এবং খেচুনি শুরু হয়। এ সময় তাকে আবার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে পেটে রেখে দেওয়া যন্ত্র বের করা হয়। এভাবে তাকে তিনবার অপারেশন করা হয়। ফলে রোগীর অবস্থা শঙ্কাজনক হয়ে যায় এবং সারা রাত সে ব্যথায় কেঁদে যায়। ভোরে তাকে ভেনাস হাসপাতাল থেকে তড়িঘড়ি কমিউনিটি বেইজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

ভুক্তভোগী স্বামী এই ঘটনার বিচার চেয়ে বলেন, ‘এটি একটি সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। তারা আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’

নিহত নারীর মামি মোছা. আফরোজা আক্তার বলেন, ‘আমাদের রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা বলেছিলেন, সব নরমাল অবস্থায় আছে। কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ভেনাস হাসপাতালের ডাক্তাররা সিজার করে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটিয়েছে।’

এ বিষয়ে ভেনাস হাসপাতালের পরিচালক আজহার মাহমুদ বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম না, তবে শুনেছি বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। এতে কত টাকা হয়েছে, তা আমার জানা নেই।’

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে ওই হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’