দুই দিন বন্ধ থাকার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে শনিবার ও রোববার পুরো রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে আবারও বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
সকাল থেকে নগরীর পাটগুদাম ও মাসকান্দা বাসটার্মিনাল থেকে ঢাকাগামী বাস ছাড়তে দেখা গেছে। এতে যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, ‘সকাল থেকে ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের বাসগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। অন্য বাসগুলোরও চলাচল শুরু হয়েছে।’
এর আগে গত শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে জুলাইযোদ্ধা রায়হানকে হেনস্তার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনার জেরে শনিবার থেকে শুরু হয় পরিবহন শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, রায়হান শুক্রবার বিকেলে বাসে ওঠার সময় পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর সঙ্গে ধাক্কা লাগলে, রায়হান নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে একাধিকবার দুঃখপ্রকাশ করেন। কিন্তু অরুণ ঝন্টু তার সঙ্গে অশালীন আচরণ ও কটূক্তি করে তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেন।
এর প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ অরুণ ঝন্টুকে আটক করে।
এ ঘটনার পরদিন শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পরিবহন শ্রমিকরা শহরের বাইপাস এলাকায় সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করে। এতে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুরগামী শতাধিক বাস আটকা পড়ে এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীরা প্রায় ছয় ঘণ্টা ভোগান্তিতে পড়েন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি ছিল, দোষীদের বিচার ও জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ সাগর হত্যা মামলার আসামি এবং আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক শামীমকে গ্রেপ্তার করা। পাশাপাশি তার মালিকানাধীন ইউনাইটেড সার্ভিসের ১৬টি বাস বন্ধ রাখা।
অন্যদিকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি ছিল, আটক শ্রমিককে মুক্তি ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
পরে জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জনদুর্ভোগ বিবেচনায় পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়।