ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বদলির দাবিতে মানববন্ধন করেছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ পৌরসভার সুবিধাবঞ্চিত বেকাররা।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ আনেন উপস্থিত লোকেরা।
দেশের বেকার যুবক-যুবতীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ‘ভ্রাম্যমাণ কম্পিউটার প্রশিক্ষণ’ কর্মসূচিটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ হলেও স্থানীয় যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার প্রচারের গাফিলতির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মানববন্ধনে বঞ্চিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ব্যানার হাতে ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদ জানান। তাদের কণ্ঠে ছিল তীব্র ক্ষোভ: ‘TECWAB-এর বাস কার পকেটে?—জবাব চাই।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সরকারি প্রশিক্ষণের বিজ্ঞপ্তি লুকিয়ে রেখে অফিস থেকে ‘পছন্দের পাত্রদের’ আবেদন করিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী আদিবা জাহান বলেন, ‘আমরা মফস্বলের বাসিন্দা। স্কিল (দক্ষতা) শিখে ডিজিটাল যুগে বাঁচতে চাই। কিন্তু যুব উন্নয়ন অফিসে গেলেই মুখ ফিরিয়ে নেওয়া হয়, যেন বিনা পয়সার প্রশিক্ষণ—শুধু ভিআইপিদের সিলেকশন। আমাদের মতো শিক্ষার্থীরা সুযোগ না পেলে সরকারের এই সুন্দর উদ্যোগ সফল হবে কী করে?’
আন্দোলনকারীদের প্রধান স্লোগান ছিল, ‘ঘুষের চাকা বন্ধ করো, ট্যালেন্টের কদর করো—বাতিল হোক গোপন ভর্তি।’
শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে চলমান অস্বচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিল করার এবং জনগণের সামনে নতুন, স্বচ্ছ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দেন, যদি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয় এবং বঞ্চিতদের আবেদনের সুযোগ না দেওয়া হয়, তবে তারা কঠোর কর্মসূচির পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এ প্রসঙ্গে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা নন্দন দেবনাথ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘যথাযথ নিয়ম মেনে, প্রচারণা চালিয়ে যুবক-যুবতীদের বাছাই করা হয়েছে।’
যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার ওয়েবাসাইটে দেখা যায়, ২৩ অক্টোবর ট্রেনিং সম্পর্কিত তথ্য আপলোড করেছেন। অথচ সেদিনই লটারি করে লোক নেওয়া সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা রহমান বলেন, ‘যেহেতু ২০ তারিখ আবেদনের শেষ তারিখ ছিল তথাপি ২৩ তারিখে ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড করা দুঃখজনক। অন্যান্য উপজেলার সঙ্গে কথা বলে যদি পুনরায় করার সুযোগ থাকে তাহলে নতুন করে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু যারা এখানে সুযোগ পেয়েছে তারা মূলত ঈশ্বরগঞ্জেরই লোক।’
এ বিষয়ে সচেতন মহলের মন্তব্য হলো, বেকারদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যথাযথ প্রচার এবং যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার সদিচ্ছার অভাবে বেকাররা বঞ্চিত হয়েছে। তাদের নূন্যতম অধিকার তাদেরকে দেওয়া উচিত ছিল বলে দাবি করেন অনেক অভিভাবক।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন