ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

গণঅভ্যুত্থানের পর পরিবর্তনের সুযোগ হেলায় হারাতে চাই না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম
বক্তব্য দেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফলে ৫ আগস্টের পর দেশে একটি পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘এই পরিবর্তন আমরা হেলায় হারাতে চাই না।’

বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় এই ফেলো বলেন, ‘নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সব মানুষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের পর আমরা কী চাই, সেসব নিয়ে আমরা একটি নাগরিক ইশতেহার তৈরি করব।’

তিনি জানান, আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে জাতীয় নেতৃবৃন্দের কাছে এই নাগরিক ইশতেহার তুলে ধরা হবে। এ উদ্দেশ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নাগরিকদের মতামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হয়ে গেলে নাগরিকদের এসব দাবি বাস্তবায়নে সরকারের ওপর আমরা চাপ সৃষ্টি করব।’

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত প্রাকনির্বাচনি উদ্যোগের অংশ হিসেবে আয়োজিত আঞ্চলিক পরামর্শ সভার স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আগামী দিনের সরকারের যারা প্রত্যাশী, তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও আমরা এটি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করব। আমাদের অবস্থান হলো- সরকার আসবে, সরকার যাবে; কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ থাকবে, দেশটাও থাকবে। সেহেতু আমাদের প্রচেষ্টা নাগরিক হিসেবে অব্যাহত রাখতে হবে।’

তিনি আরও জানান, এর আগে সিলেট, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশালে একই ধরনের পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় উপস্থিত প্রায় শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীদের কাছে দুটি প্রশ্ন তোলা হয়, নির্বাচন পরবর্তী সরকারের কাছে তাদের প্রত্যাশা কী? এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি তাদের প্রত্যাশা কী?

এই দুই প্রশ্নের উত্তরে অধিকাংশ নাগরিক সুশাসন এবং নিপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন কমিশনের পক্ষে মত দেন। এ ছাড়া তারা সুশাসন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, আইনের শাসন, স্থানীয় উন্নয়ন, নারীর অধিকার, ন্যায়বিচার ও মেধা-ভিত্তিক চাকরির দাবিও জানান।

এ ছাড়া অনেকে কালো টাকার প্রভাবমুক্ত পরিবেশ, মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করা এবং শিক্ষিত ব্যক্তিদের সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষেও মত দেন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আমজাদ আলী, একে এম মাহবুবুল আলম, জামায়াতে ইসলামী নেতা ড. শহীদুল্লাহ কায়সার, সিপিবি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল, জেলা সুজনের সম্পাদক ইয়াজদানী কোরায়শী কাজল, এস. এম. মজিবুর রহমান, নারী উদ্যোক্তা রেবেকা সুলতানা, সালমা আক্তার, সুরাইয়া আক্তার, কাব্য সুমি সরকার, এনজিও ব্যক্তিত্ব শরীফুজ্জামান পরাগ, দেলোয়ার হোসেন, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি জয়িতা তনু, আদিবাসী প্রতিনিধি নারায়ণ হাজং, অর্যণ চিরান এবং সাধারণ নাগরিক খন্দকার আব্দুল আলীম প্রমুখ।