এশিয়া কাপ এখনো জেতা হয়নি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। বেশ কয়েকবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা জেতা হয়নি তাদের। সিনিয়র দলের মতো এবার এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে স্বপ্ন ভঙ্গ হলো বাংলাদেশ ‘এ’ দলেরও। এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারসের ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ^াসরুদ্ধকর লড়াই শেষে সুপার ওভারে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাকিস্তান। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এই শিরোপা জিতল তারা। আর বাংলাদেশ আরেকটি এশিয়া কাপের ফাইনালে হারের হতাশায় পুড়ল। ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে নাটকীয় সুপার ওভারে জিতে এশিয়া কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ফাইনালেও হলো সুপার ওভার। যেখানে বাংলাদেশের দেওয়া ৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২ বল হাতে রেখেই শিরোপা জিতল পাকিস্তান।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে লড়াই জমিয়ে তুলেন বাংলাদেশের বোলাররা। মূলত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় শিরোপার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের। টুর্নামেন্টজুড়ে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা স্পষ্ট ছিল। জিসান আলম-জাওয়াদ আবরাররা নিজেদের চেনাতে ব্যর্থ। এইচপি দলে না থাকা আবরারের দলে ডাক পাওয়া নিয়েও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এমন সমীকরণে ব্যাট হাতে প্রতি ম্যাচেই নিজের সঙ্গে তাকে লড়াই করতে দেখা গেছে। প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে করেন ৪ বলে ২ রান। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে সংগ্রাম করে করেন ২২ বলে ২৪ রান। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেন ২৩ বলে ২৫ রান। যা একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের নামের পাশে বেমানান। পরে সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে আবরার করেন ১৯ বলে ১৩ রান। এমন ইনিংস খেলার পরে তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, পরে ফাইনালে ছিলেন ডাগ-আউটে। অন্য দিকে একই চিত্র জিসান আলমের ক্ষেত্রেও। দেশের হয়ে জাতীয় দল বাদে সব জায়গায় প্রতিনিধিত্ব করেন। কিন্তু কোথাও ধারাবাহিক হতে পারছেন না। তিনি ৫ ম্যাচ খেলে করেছেন ৭৯ রান। যা একজন ওপেনারের জন্য অস্বস্তিকর। অন্যদিকে, ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে নতুন করে চেনালেন মেহেরব হোসেন অহিন। টুর্নামেন্টজুড়ে যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছেন রান করেছেন। এ ছাড়া বল হাতেও নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা ছিল। ৫ ম্যাচে বল হাতে নিয়েছেন ৫ উইকেট, রান করেছেন ৮৩। এ ছাড়া গফফার সাকলাইনও বল হাতে নতুন করে সকলের নজর কেড়েছেন। মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন নিজের সামর্থ্যরে, নিয়েছেন ৫ উইকেট। তবে ইকোনমি রেট কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ছিলেন দায়িত্ববান। এর আগে ফাইনালে নির্ধারিত ২০ ওভারে বল করতে নেমে পাকিস্তানকে মাত্র ১২৫ রানে আটকে দেন রিপন ম-ল, রাকিবুল হাসানরা। ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর রিপন-সাকলাইনদের কল্যাণে বাংলাদেশও সমান ১২৫ রান করে। বাংলাদেশ-ভারত সেমিফাইনালের মতো ফাইনালও গড়ায় সুপার ওভারে। যেখানে প্রথম বলে হাবিবুর রহমান সোহান এক রান নেওয়ার পর স্ট্রাইকে যান আব্দুল গাফফার সাকলাইন। দ্বিতীয় বলেই তিনি আউট হয়ে যান। এরপর পাক পেসার আহমেদ দানিয়াল ওয়াইড এবং বাই চার দিয়ে বসেন। জিসান প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ আর কোনো রান যোগ করতে পারেনি। ফলে তাদের পুঁজি দাঁড়ায় স্রেফ ৬ রান। সুপার ওভারের প্রথম দুটি বলই ইয়র্কার করেছিলেন রিপন। তবে দুবারই সিঙ্গেল রান পেয়ে যায় পাকিস্তান। একইভাবে তৃতীয় বলটি ছাড়তে গিয়ে ফুল টস দিয়ে বসেন ডানহাতি এই পেসার। যা কাজে লাগিয়ে স্কয়ার লেগে সাদ মাসুদ চার আদায় করে নেন। পরের বলে সিঙ্গেল রান নিয়েই মাতেন বিজয়োল্লাসে।

