ঢাকা সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫

কুড়িল–গাউসিয়া রুটে বিআরটিসি বাসে শিক্ষার্থী ও যাত্রীদের হয়রানি চলছেই

পূর্বাচল (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম
বিআরটিসি বাসে শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীরা প্রতিদিন নানা অনিয়ম ও হয়রানির শিকার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কুড়িল থেকে গাউসিয়া রুটে বিআরটিসি বাসে সরকারি হাফ ভাড়ার সুবিধা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীরা প্রতিদিন নানা অনিয়ম ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। স্কুল-কলেজের পোশাক পরা শিক্ষার্থীরা বলছেন, হাফ ভাড়া চাইলেই চালক ও হেলপারের কটূক্তি, অবজ্ঞা এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ঘটনা ঘটে।

রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এই রুটে নিয়ম বহির্ভূত ভাড়া আদায়, অশোভন আচরণ, সময়মতো বাস না চলা এবং প্রতিশ্রুত সেবা না দেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। এর প্রতিবাদে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা ৩ আগস্ট বিআরটিসি চেয়ারম্যান বরাবর ৮ দফা দাবিসম্পন্ন স্মারকলিপি দেয়। দাবিগুলো ছিল: শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া নিশ্চিত করা, নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা, ভাড়া তালিকা প্রকাশ, চালক-হেলপারদের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং নিয়মিত তদারকি।

কিন্তু ১৪ কর্মদিবস পার হওয়ার পরও কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন হয়নি। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ১৭ আগস্ট বিকেলে কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থী, সাধারণ যাত্রী ও এলাকাবাসী অংশ নেন।

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, গাজীপুর ডিপো ম্যানেজার খাইরুল হক উজ্জলের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে যাত্রী হয়রানি দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে কুড়িল কাউন্টারে টানানো ‘মস্তুল পর্যন্ত হাফ ভাড়া’ লেখা ব্যানার নতুন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।

কলেজ ছাত্রী রিদ্বীন বলেন, ‘হাফ ভাড়া দিতে চাইলে মনে হয় আমরা অপরাধ করছি। প্রতিদিন অপমান সহ্য করতে হয়। নারী যাত্রীদের সঙ্গে অনেক সময় অশোভন আচরণ করা হয়। বাসে ওঠার সময়ই ভয় কাজ করে।’

শিক্ষার্থী জুবায়ের ইসলামও তুলনা করে বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনে চলতে চাই, কিন্তু চালক-হেলপাররা যেন ভিন্ন জগতে বাস করছেন। হাফ ভাড়া চাইলে কথা শুনতে হয়, না হলে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি।’

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম হিমেল বলেন, ‘জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা প্রতিষ্ঠানে জনগণই হয়রানির শিকার হচ্ছে। এটা আর চলতে দেওয়া হবে না। দাবিগুলো দ্রুত মানতে হবে, নইলে কঠোর কর্মসূচি আসবে।’

যাত্রীদের চোখে এখন একটাই প্রশ্ন—বিআরটিসি কি সত্যিই যাত্রীবান্ধব হবে, নাকি আরও বড় আন্দোলনের মুখোমুখি হবে?