নরসিংদীর দড়িনবীপুরে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার পর আরও ৫ লাখ দিতে না পারায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সাদিরিন নামের এক গৃহবধূ। নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ওই গৃহবধুর স্বামী মুছা মিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মুছা মিয়ার নামে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী সাদিরিন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, দড়িনবীপুর গ্রামের মো. ইমান আলীর কন্যা সাদিরিন আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার কালাই গোবিন্দপুর গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মো. মুছা মিয়ার সঙ্গে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ৪০ হাজার টাকা দেন মোহরানা ধার্য করে ইসলামী শরিয়তের বিধান মোতাবেক রেজিস্ট্রিকৃত কাবিনে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর সাদিরিন আক্তারের পিতা মো. ইমান আলী মেয়ের সুখের জন্য তার জমানো প্রায় ৩ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র দেন।
এ ছাড়াও মুছা মিয়া বিদেশ যাওয়ার জন্য তার শ্বশুর ইমান আলীর কাছ থেকে আরও ২ লাখ টাকা ধার নেন। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। এরপর থেকে সাদিরিন আক্তারের শ্বশুর মো. নজরুল ইসলাম ও শাশুড়ি আয়েশা বেগমের ‘কুপরামর্শে’ মুছা মিয়া তার স্ত্রীর কাছে আরও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। সাদিরিন তার পিতার পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানালে তার ওপর শুরু হয় নির্যাতন।
গত মাসের ২৯ এপ্রিল ঘটনার দিন সবােই মিলে সাদিরিন আক্তারের কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। সাদিরিন এতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে তাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
পরে সাদিরিন আক্তার বাদী হয়ে স্বামী মুছা মিয়াসহ তিনজনকে আসামি করে গত ১৭ মে নরসিংদী সদর সিআর আমলি আদালতে ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা মোতাবেক একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা করার পর আসামিপক্ষের লোকেরা বাদীকে মামলাটি উঠিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন এবং হুমকি প্রদান করেন যে, মামলাটি উঠিয়ে না নিলে তাকে চিরদিনের জন্য এই পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেওয়া হবে।
সাদিরিন আক্তার আসামিদের ভয়ে বর্তমানে জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। তিনি এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।