শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪, ১০:০৩ পিএম

সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা স্কুলের কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য!

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪, ১০:০৩ পিএম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নাটোরের সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা স্কুল এন্ড কলেজে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য এবং অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর অভিযোগ উঠেছে। এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নাম পরিবর্তন সহ বিএনপির কিছু লোকজনকে চাকুরী দেয়ার নতুন ফন্দি করেছেন ইদ্রিস আলী। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলে ও ম্যানেজ প্রক্রিয়া করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। টাকা ফেরত চেয়েও পাচ্ছে না তারা।

অপরদিকে ইদ্রিস আলী আওয়ামী লীগের ভোল পাল্টে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেল এবং তার ঘনিষ্ঠজন ইদ্রিস আলী এই বাণিজ্যের মুল হোতা। নিজের ফায়দা হাসিলের জন্য ইদ্রিস আলী ২০১৮ সালে লুৎফুল হাবিব রুবেলকে ঐ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেন। এর আগে ২০১৪ সাল থেকে অঘোষিত অধ্যক্ষ ছিলেন ইদ্রিস আলী। সভাপতি করা হয় নুরুল ইসলাম নামে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে। নামমাত্র তার স্বাক্ষর নেয়া হলে ও সব হিসাব, নিকাশ এবং নিয়োগ বাণিজ্যের মুল হোতা ইদ্রিস আলী।

২০১৪ সালে মহেশচন্দ্রপুর গ্রামে গড়ে উঠে মুক্তিযোদ্ধা স্কুল এন্ড কলেজ। বেকার যুবকদের চাকুরী দেয়ার নাম করে গড়ে উঠে প্রতিষ্ঠানটি। নামমাত্র মুক্তিযোদ্ধা ব্যবহার করে পুরো প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ ভার নেন ইদ্রিস আলী৷ অধ্যক্ষ লুৎফুল হাবিব রুবেলের ছত্র-ছায়ায় এবং তার পরামর্শে বেকার যুবকদের চাকুরী দেয়ার নাম করে নিয়োগ বাণিজ্যে শুরু করেন।

বিভিন্ন পত্রিকায় সার্কুলার দিয়ে ৭০ থেকে ৮০ জন পুরুষ ও নারী শিক্ষক, কর্মচারী নিয়োগ দেন। যাদেরকে কোনো নিয়োগ পত্র না দিয়ে মৌখিক ভাবে নিয়োগ কিংবা পদ দেয়া হয়। স্কুলের কেজি শাখা, প্রাথমিক শাখা, মাধ্যমিক শাখা, ভোকেশনাল শাখায় একের পর এক নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে ঈদ্রীস আলীর বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর ও অভিযোগ উঠেছে।

জবেদা নামে এক অফিস সহকারী নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে ঐ নারীর সংসার ভেঙ্গে দেন তিনি । পরবর্তীতে ঐ নারীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে ৬ মাস রাজশাহী মহানগরীতে বাসা ভাড়া করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ঐ মেয়ে আবার ও তার আগের স্বামীর ঘরে ফিরে আসে।

ভুক্তভোগী জবেদা বলেন, ইদ্রিস আমাকে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে আমার সংসার ভাঙ্গেছে আমাকে রেখে পালিয়েছে এখন আমি আমার প্রথম স্বামীর সংসারে ফিরে এসেছি।
২৪এর ৫ ই আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আত্নগোপনে চলে যান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক অধ্যক্ষ লুৎফুল হাবিব রুবেলনও তার সহযোগি এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দাবিদার ইদ্রিস আলী ও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে এসে প্রতারণার শিকার অনেকে। এর মধ্যে রয়েছেন মাহফুজা আক্তার, মনজুরুল, সুজন, নাহিদ হোসেন, খোকন আলী, ওমর ফারুক, আশিক, ফারহানা খাতুন, ফাতেমা, জেসমিন, রনি, রোজিনা, আরিফ, মাহফুজা, তৌফিক, ফারুক হোসেন, সারোয়ারসহ অর্ধশত যুবক ও যুবতি। এসব বেকারদের কর্মসংস্থান দেয়ার কথা বলে জনপ্রতি ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগী ফারহানা জানান, আমি দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছি। আমাদের কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকা নেয়া হয়। স্কুলে এখন আর কাউকে ঠিক মতো পাওয়া যায় না। টাকা ফেরতের জন্য ফোনে ইদ্রিস আলীকে বলা হয়েছে। এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। টাকা ফেরত পায়নি।

সারোয়ার হোসেন বলেন, আমাকে ভোকেশনাল শাখায় নিয়োগ দিবে বললে নিয়োগ দেয়নি। লক্ষাধিক টাকা দিয়েছি। এখন ফোন ধরে না। আমি টাকা ফেরত চাই। কারন প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতি চলছে।

অভিযুক্ত ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ইদ্রিস আলী মুঠোফোনে বলেন, আমি জরুরি কাজে ঢাকায় আছি। প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দাখিল করা হয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে বলেন, নিয়োগের টাকায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা হয়েছে। সরকারের অনুদানের অর্থ কিংবা কত টাকা ফান্ডে রয়েছে তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

ঐ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম জানান, তিনি অসুস্থ। শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের কোনো লেনদেনে সে যুক্ত নাই। শুধুমাত্র স্বাক্ষর লাগলে দেয়া হয়। এর বাইরে ২/১ টি জাতীয় দিবসে স্কুলে যাওয়া হয় মাত্র। তাছাড়া সব কাজ ইদ্রিস আলী করে থাকে।

সিংড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুর রহমান জানান, ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক ও ভোকেশনাল শাখা অনুমোদন পেলেও অন্য শাখার অনুমোদন নাই। আর নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি তাদের এখতিয়ার। তবে এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

আরবি/জেডআর

Shera Lather
Link copied!