ঢাকা শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫

নেত্রকোনায় শিক্ষিকাকে মারধরের অভিযোগ অপর শিক্ষিকার বিরুদ্ধে

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

নেত্রকোনার আটপাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে অপর এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষিকা ভুক্তভোগীর সহকর্মী নন, বরং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলন করে বিচার দাবি করেছেন।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় উপজেলার অভয়পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাজারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম আমাকে দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় বিভিন্নভাবে হয়রানি শুরু করেন। কিছুদিন আগে আমি বিদ্যালয়ে ১০-১৫ মিনিট দেরিতে আসায় তিনি আমাকে শোকজ করেন। প্রতিবাদ জানালে গত বুধবার দুপুরে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী তাসলিমা কোহেন বিদ্যালয়ে এসে আমাকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। তিনি নিজে অন্য স্কুলের শিক্ষক হয়েও স্বামীর পক্ষ নিয়ে এমন কাজ করেছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার সময় আশপাশে স্থানীয় অনেক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

অভিযুক্ত শিক্ষিকা তাসলিমা কোহেন উপজেলার ছয়াশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।

প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ে নিয়মিত দেরিতে আসায় ওই শিক্ষিকাকে শোকজ করি। এতে তিনি এবং তার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে ভাড়াটে লোকজন এনে আমার ওপর হামলা চালান। পরে বিষয়টি শুনে আমার স্ত্রী স্কুলে গিয়ে তার সঙ্গে তর্কে জড়ান। এখন তারা ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত উপজেলা ছাত্রদলের নেতা মুন্না খান শাহীন ও স্বরমুশিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মিষ্টার বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মারধরের অভিযোগ করেছেন। আমরা এলাকার বাসিন্দা হিসেবে তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। এরপর তিনি নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আমাদের রাজনৈতিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করছেন। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার চাই।’

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ মুকুল বলেন, ‘সহকারী শিক্ষিকাকে শোকজ করার বিষয়টি আমি জানি। তবে তিনি কখনো শ্লীলতাহানি বা কুপ্রস্তাবের বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেননি। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরাও বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই দিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে দেখি, প্রধান শিক্ষকের পাঞ্জাবি ছেঁড়া। তাকে মারধর করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে মারধরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা কর্মকর্তারা বিষয়টি তদন্ত করে সুষ্ঠু সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।