ঘূর্ণিঝড় দানার বিরূপ আবহাওয়ার কারণে পাটকেলঘাটা থানার বিভিন্ন এলাকায় ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভোর থেকে হালকা ও মাঝারি গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পাটকেলঘাটা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদের পানি বেড়ে গেছে। ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ার কারণে এলাকার খেটে খাওয়া লোকজনসহ সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ।
ঘূর্ণিঝড় দানার আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। এদিকে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩নং সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে ৪২মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে আজ ও আগামীকাল শুক্রবার ঝড়ো হাওয়াসহ থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হবে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ রাসেল রূপালী বাংলাদেশকে জানান, আমরা পাটকেলঘাটা থানাসহ উপজেলার বারটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারদের নিয়ে আজ বেলা বারোটাই মিটিংয়ে বসছি সবাইকে যার যার স্তান থেকে সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে এবং সাইক্লোন সেন্টারগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে এবং দুর্যোগ সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে বারোটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে সাধারণ জনগণের যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। মেম্বার চেয়ারম্যানদের নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবছর বেশি হওয়ায় উপজেলার খেটে খাওয়া লোকজন তাদের কাজ হারিয়ে হয়ে পড়েছে অসহায়।
পাটকেলঘাটা বাজারে ভ্যানচালক কৃষ্ণ দাস বলেন, তিন মেয়ে ও স্ত্রীসহ চারজনের সংসার জিনিস পত্রের দাম অনেক বেশি এদিকে আমাদের কোন কাজ নাই বৃষ্টি মাথায় ঝড়ের সব ভয়-ভীতি অপেক্ষা করে সকাল থেকে বাজারে এসে বসে আছি বেলা একটা বাজে এখনো পর্যন্ত কোন প্যাসেঞ্জার পাই নাই। এভাবে চলতে থাকলে সংসার চলবে কিভাবে আমাদের।
অপরদিকে বাজারের মুদি দোকানদার তরিকুল ইসলাম বলেন, ঝড়ের আবহাওয়ার কারণে বেচাকেনা খুবই কম বাজারে নেই তেমন কোন লোক জোন মানুষ অধিক প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বাহির হচ্ছে না আমাদেরও কেনাবেচা অনেক কমে গেছে।
পাটকেলঘাটা বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ি রবিউল ফার্মেসীর মালিক ফিরোজ হোসেন বলেন, মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য এই ঝড়ের মাঝে ও আমরা ঔষধের দোকান খুলে বসে আছি কিন্তু কেনাবেচা খুবই কম বাজারে নেই তেমন কোন লোক সমাগম।
প্রসঙ্গত, সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরা পাটকেলঘাটায় ও ২০০৭সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর ২০০৯ সালের ২৫ মে, ঘূর্ণিঝড় আইলা ২০১৩ সালের ১৬ মে মহাসেন, ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই কোমেন, ২০১৬ সালের ২১ মে রোয়ানু, ২০১৭ সালের ৩০ মে মোরা, ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর বুলবুল, ২০২০ সালের ২০ আম্পান, ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস, ২০১২ সালের ১২ মে অশনি, ২০২৩ সালের ১৪ মে মোখা, ২০২৪ সালের ২৬ মে রিমাল আঘাত হানে।
এ সময় উপজেলার বেতনা নদীর ভেড়িবাঁধ ভেঙে যায় ও শালিকা ভেড়িবাদ ফাটল ধরে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পানিতে ডুবে যায়। এখনো অনেক এলাকা পানিতে নিমজ্জিত আছে । আর এ কারণে সব এলাকার অধিকাংশ লোকজন হয়ে পড়েছে বেকার। জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত এরই মাঝে শুরু হয়েছে ঘূর্ণিঝড় দানা পাটকেলঘাটা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কবুতাক্ষ নদ। দানার ঝড়ো হাওয়ার কারণে কপোতাক্ষ নদে পানি বেড়ে গেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন