চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা না যেতেই আবারও রাজনীতিতে ফিরেছেন সেই যুবদল নেতা মো. হোসেন মিয়া।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি নতুন এক বিবৃতিতে জানান, সিনিয়র নেতাদের অনুরোধ ও এলাকার মানুষের পরামর্শে তিনি রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন এবং পুনরায় সক্রিয়ভাবে বিএনপি ও যুবদলের রাজনীতিতে যুক্ত থাকবেন।
এর আগে শনিবার (৬ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে মোবাইল ফোনে ধারণ করা তার দুধ দিয়ে গোসলের ভিডিওটি নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করলে তা এলাকায় ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয় এবং আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। হোসেন মিয়া উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
ভিডিওতে হোসেন মিয়া ক্ষোভভরা কণ্ঠে জানান, ‘আমার এই ভিডিওটা দেখার পর সবার কাছে আমি হাসির পাত্র হয়ে থাকব। এমনিতেই আজ আমি সবার হাসির পাত্র। আমি ধ্বংস হইনি, আমাকে ধ্বংস করা হয়েছে টাকা আর ষড়যন্ত্র নামক সিস্টেমের কাছে।’
তিনি আরও লিখেন, ‘আমার কাছের মানুষগুলো আমার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছে। আমার মতো দুই-চার জন রাজনীতিতে না থাকলে কিছুই হবে না। আমার লড়াইটা ছিল বিএনপির জন্য, যুবদলের জন্য, চাঁদপুর-২ আসনের প্রার্থী ড. জালাল সাহেবের জন্য।’
তার মন্তব্যে স্পষ্টভাবে অভিযোগ করা হয় যে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কিছু ব্যক্তি মিলে ক্ষমতাবান গোষ্ঠীর সহায়তায় তাকে রাজনৈতিকভাবে চাপের মুখে ফেলেছেন।
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত স্থানীয় বিএনপি ও যুবদল নেতারা তার বাড়িতে গিয়ে পরিস্থিতি আলোচনা করে সমাধান করেন। পরে তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথা জানান।
পরবর্তীতে হোসেন মিয়া বলেন, ‘আমাদের পূর্ব হানিরপাড় গ্রামে একটি সামাজিক ঘটনা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়। রাগ, অভিমান ও মানসিক চাপে পড়েই ভিডিওটা দিয়েছিলাম। পরে সিনিয়র নেতারা আমাকে অনেক বুঝিয়েছেন। তাই আবারও দলের হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে আগের মতোই বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকব।’
কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মহসিন ব্যাপারী জানান, ‘হোসেন মিয়া বর্তমান কমিটিতে না থাকলেও তিনি সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। সামাজিক একটি বিরোধকে কেন্দ্র করে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল। এখন সব ঠিক হয়ে গেছে। তিনি আবারও আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন এবং সামনে ধানের শীষ বিজয়ের জন্য মাঠে থাকবেন।’
হোসেন মিয়ার দুধ দিয়ে গোসলের ভিডিওটি শুধু মতলব উত্তর নয়, পুরো জেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কেউ এটিকে আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত বলছেন, কেউ আবার এটিকে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে রাজনৈতিক নাটকীয়তা হিসেবে দেখছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন