সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম

৩ দাবিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মানববন্ধন

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লিখিত পরীক্ষার অযৌক্তিক কঠোরতা শিথিল করে কর্মদক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও ব্যবহারিক যোগ্যতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি প্রণয়ন এবং লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সাম্প্রতিক নিয়োগ বাতিলের দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বাংলাদেশ হরিজন যুব ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রিংকু ডোমের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক পংকজ বাসফোর। বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা বাইজু সরদার, সাবেক সহ-সভাপতি লেবু বাসফোর, গাজীপুর মহানগর সভাপতি রতন লাল, ঢাকা মহানগর সহসভাপতি গজন লাল, সম্পাদক বিমল ডোম, উওরের সভাপতি রুবেল, যুব পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মুকেশ বাসফোর, ছাত্র পরিষদের সম্পাদক হৃদয় দাসসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এডভোকেট উৎপল বিশ্বাস, নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সিমা দত্ত, বাংলাদেশ জয়ভীম ছাত্র যুব ফেডারেশনের সম্পাদক হেমন্ত হাড়ী সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও টিক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ছামিউল আলম রাসু বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং সাম্প্রতিক সময়ের কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন—প্রতিটি ঐতিহাসিক সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল বৈষম্য দূর করে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, স্বাধীন বাংলাদেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, কৃষক এবং অবহেলিত মানুষেরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে এবং তাদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধিত হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও সেই স্বপ্ন এখনো পুরোপুরি পূরণ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, ব্রিটিশ শাসনামলে ‘হরিজন’ সম্প্রদায়কে যেভাবে ‘চাকর’ হিসেবে ব্যবহার করা হতো, সেই প্রথা ও মানসিকতা আজও সমাজে বিদ্যমান। এই সম্প্রদায়ের মানুষ এখনো সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত অংশ। তাদের সন্তানদের শিক্ষার পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, উচ্চতর চাকরির ক্ষেত্রে তাদের জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থা নেই।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা ঝাড়ুদারের মতো যে পদগুলোতে তাদের ঐতিহ্যগতভাবে কাজ করার কথা, সেখানেও আজ রাজনৈতিক পছন্দের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য হয়ে উঠেছে।

একজন নাগরিক হিসেবে যা কখনোই কাম্য নয়, তা হলো তাদের প্রতি অমানবিক আচরণ। বিভিন্ন সময়ে কোনো পূর্বনোটিশ বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ছাড়াই তাদের বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করা হয়ে থাকে। এটি তাদের মৌলিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য সকল নাগরিকের মতো এই অবহেলিত মানুষদেরও মর্যাদাপূর্ণ জীবন এবং অধিকার দরকার। এই বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো তাদের নিজেদের মধ্য থেকে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি করা এবং সংসদে নিজেদের প্রতিনিধি পাঠানো।

প্রতিনিধিরা সংসদে গিয়ে নিজেদের সম্প্রদায়ের সমস্যাগুলো তুলে ধরবেন এবং নিজেদের অধিকার রক্ষায় আইন প্রণয়নে সরাসরি অংশ নেবেন, তখনই প্রকৃত সংস্কার সম্ভব হবে। একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে হলে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

আরও সংহতি জানিয়ে, বিডিআরএম-এর কেন্দ্রীয় সম্পাদক শিপন রবিদাস, জাগ্রত মানব অধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধনে বলেন, সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র এমনভাবে কঠিন করা হয় যা প্রকৃত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সক্ষমতার সঙ্গে বাস্তবসম্মত নয়। ফলে অভিজ্ঞ ও পেশাগতভাবে দক্ষ আবেদনকারীরা অন্যায়ভাবে বঞ্চিত হন। বক্তারা এই লিখিত পরীক্ষাকে অযৌক্তিক, অমানবিক ও পেশার প্রকৃত দক্ষতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেন।

মানববন্ধনে আরও দাবি জানানো হয়—
১) পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগে লিখিত পরীক্ষার পরিবর্তে ব্যবহারিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
২) সম্প্রতি অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে বাতিল ঘোষণা করে নতুনভাবে স্বচ্ছ, ন্যায়সংগত ও দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩) সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সকল প্রতিষ্ঠানে হরিজন জনগোষ্ঠীর জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে ৮০% সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

বক্তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদের নিয়োগে বৈষম্য, অনিয়ম ও অযৌক্তিক মূল্যায়নের ফলে হরিজনসহ বহু অভিজ্ঞ কর্মী ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।

Link copied!