মোবাইল ব্যবসায়ীদের আন্দোলনে বিটিআরসি চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সংস্কারসহ কয়েকটি দাবিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে কঠোর কর্মসূচিতে নেমেছেন মোবাইল ব্যবসায়ীরা। 

রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ‘বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি’-এর ব্যানারে শত শত ব্যবসায়ী আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনের সামনে জড়ো হয়ে অবস্থান নেন। তাদের অবস্থানে সড়কের এক পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে, সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ। 

এ সময় ব্যবসায়ীরা বিটিআরসি ঘেরাও করে ভবনের ভেতরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারীসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ রাখেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকেও তারা ভবনের ভিতরে অবস্থান করছেন বলে রূপালী বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন একাধিক কর্মকর্তা। তবে বিটিআরসির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি।

৫ ঘণ্টা ধরে অবরোধ, আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান শিক্ষার্থীদের 

বিস্তারিত পড়ুন

এমবিসিবি সেক্রেটারি আবু সায়ীদ পিয়াস বলেন, ‘আমরা বহুবার সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বৈঠকের অনুরোধ করেছি, কিন্তু একবারও ডাকা হয়নি। আলোচনা হলে সমস্যা সমাধান সম্ভব ছিল। এখন পরিস্থিতি পিঠে দেওয়ালে ঠেকে গেছে। দেশের খুচরা ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখেছেন।’

এমবিসিবি যমুনা ফিউচার পার্ক শাখার সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘এনইআইআর পুরোপুরি চালু হলে লক্ষাধিক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিশেষ কিছু গোষ্ঠী লাভবান হবে এবং গ্রাহকেরা মোবাইলের উচ্চ দাম ও জটিল প্রক্রিয়ার ভোগান্তি ভোগ করবেন। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) জাকির হোসেন বলেন, ‘বিটিআরসি ভবনের সামনে মোবাইল ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা ডাইভারশন দিয়ে অন্য রাস্তায় যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করেছি। আগারগাঁও একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এটি বন্ধ থাকায় অন্য রাস্তায় চাপ বেড়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।’

ব্যবসায়ীদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে এনইআইআর সংস্কার, সিন্ডিকেট প্রথা বাতিল এবং মোবাইল ফোন আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করা। তাদের অভিযোগ, নতুন নিয়ম বাস্তবায়িত হলে লাখো ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিশেষ একটি গোষ্ঠী লাভবান হবে এবং বাড়তি করের ফলে মোবাইলের দামও বেড়ে যাবে।

এর আগে, গত ৩০ নভেম্বর সকাল ১০টায় পূর্ব-ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দোকান বন্ধ রেখে রাজধানীর কারওয়ান বাজার–পান্থপথ এলাকায় মানববন্ধন করেছিলেন বিভিন্ন শপিং মলের মোবাইল ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।

উল্লেখ্য, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টেলিযোগাযোগ খাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনের ব্যবহার রোধ করতে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা। এর ফলে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে নিবন্ধনবিহীন, চুরি হওয়া বা অনুমোদনহীন আমদানি করা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। আন্দোলনটি ঠিক এই প্রয়োগের আগে শুরু হয়েছে।