ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

পটুয়াখালীতে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০১:৩২ পিএম
ছাত্রদল সভাপতি মো. রেজাউল গাজী। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দশমিনা উপজেলায় জেলেদের জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। দেশীয় অস্ত্রের মুখে জেলেদের আটকে রেখে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়, পরে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চর বোরহান ইউনিয়নের পাগলার বাজার খালের গোড়ায়। অভিযুক্ত হলেন, ওই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. রেজাউল গাজী।

ভুক্তভোগী জেলে মো. মাইনুদ্দিন পালোয়ান (৩৫) জানান, গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় তিনি শ্বশুরবাড়ি চর শাহজালাল গ্রাম থেকে ট্রলার ও জাল নিয়ে ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিলেন ফুফাতো ভাই সোহেল মল্লিক (৪০), ভাগিনা নাইম (১৪) ও জিহাদ (১২)। ফেরার পথে পাগলার বাজার খালের মুখে ছাত্রদল নেতা রেজাউল গাজী তার ১০-১২ জন সহযোগী নিয়ে ট্রলারসহ তাদের আটক করে। পরে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

মাইনুদ্দিন বলেন,আমরা গরিব জেলে মানুষ। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমাদের মারধর করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। সারারাত জিম্মি করে রাখে। পরে ভোররাতে ১০ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পাই।”

চাঁদা দিয়ে মুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্থানীয় হেলাল মৃধা। তিনি বলেন, রাতে সোহেল মল্লিক ফোন করে জানায় তারা আটকা পড়েছে। পরে আমি গিয়ে ১০ হাজার টাকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনি।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত রেজাউলের বিরুদ্ধে এর আগেও তরমুজবাহী ট্রলার আটকিয়ে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছিল।

ভুক্তভোগী সোহেল মল্লিক বলেন, আমরা মাছ ধরতে যাইনি, শুধু জাল আনতে গিয়েছিলাম। অথচ ছাত্রদল নেতা রেজাউল আমাদের পথরোধ করে টাকা দাবি করে।”

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদল নেতা রেজাউল গাজী বলেন, তারা মা ইলিশ ধরছিল। নিষেধ করায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব গাজী সালাহ উদ্দিন বলেন, ছাত্রদলের পদে থেকে কেউ এমন কর্মকাণ্ড করতে পারে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলীম জানান,এমন কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একজন ছাত্র রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নদীপাড়ের জেলেরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

অন্যদিকে, ছাত্রদলের ভেতরেও এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও বিভাজন দেখা দিয়েছে। দশমিনার নদীপাড়ে গরিব জেলেদের ওপর চাঁদাবাজির এই অভিযোগ প্রশাসন কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখে সেটিই এখন সময়ের প্রশ্ন।