রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিহত রাসেল মোল্লার (২৮) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তবে এই ঘটনায় এখনো মামলা করেনি পরিবার।
নিহত রাসেল উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের জটু মিস্ত্রিপাড়ার আজাদ মোল্লার ছেলে। তিনি নুরাল পাগলার ভক্ত এবং মাঝেমধ্যে দরবারের খাদেম হিসেবে কাজ করতেন। পরিবারে দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ছিলেন। স্ত্রী ও এক ছেলে, এক মেয়ে আছে। মোস্তফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাভার্ডভ্যান চালক ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সংঘর্ষে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
রাসেলের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনরা হত্যার বিচার দাবি করেছেন। প্রতিবেশীরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালে নিয়েও তাকে মারধর করা হয়েছে।
রাসেলের বাবা জানান, ছোটবেলা থেকেই রাসেল দরবার শরীফে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতো। দাদা থেকে শুরু করে পরিবারেই সবাই ওই দরবারের ভক্ত ছিলেন। হামলার সময় রাসেলকে এলোপাতাড়ি মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়, পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। পরিবারের সবাই মিলে আলোচনা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেবো।’
গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্তত ২২ জন আহতকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গুরুতরদের ফরিদপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে অজ্ঞাত ৩,৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। আহত হয়েছেন ১৭ পুলিশ সদস্যও।
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নুরাল পাগলার দরবার এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দরবারের ভেতর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ধ্বংসস্তূপ। মাঝেমধ্যে আগুনের ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। একনজর দেখতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন