রাজশাহীতে ঘরে ঘরে সর্দি, জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। শহর থেকে গ্রাম- সবখানেই ছড়িয়ে পড়েছে এসব ভাইরাস রোগ। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রাপ্তবয়স্ক- সব বয়সি মানুষ রয়েছেন।
গত কয়েকদিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) রোগীর চাপ বেড়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৯০ জন। এরমধ্যে সর্দিজ্বরে আক্রান্ত ৫০ এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৪০ জন। বেশির ভাগই প্রাপ্তবয়স্ক।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ১৩ আগস্ট সর্দিজ্বরে ভর্তি হন ৫০ জন, যাদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ৪২ ও শিশু ৮ জন। এর আগের দিন ৬০ জন রোগী চিকিৎসা নেন, তাদের ৫০ জনই প্রাপ্তবয়স্ক। ১১ আগস্ট চিকিৎসা নেয় আরও ৫০ জন, এরমধ্যে ৩৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১৫ জন শিশু।
একইভাবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৩ আগস্ট ভর্তি হয়েছেন ৪০ জন- প্রাপ্তবয়স্ক ২৪ এবং শিশু ১৬ জন। ১২ আগস্ট ৫৫ জন (৩৫ প্রাপ্তবয়স্ক, ২০ শিশু) এবং ১১ আগস্ট ৫০ জন (৩০ প্রাপ্তবয়স্ক, ২০ শিশু) ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন।
রোগীদের মধ্যে জ্বর, গলাব্যথা, হালকা কাশি, মাথা ও শরীর ব্যথা, দুর্বলতা এবং কিছু ক্ষেত্রে হালকা শ্বাসকষ্টের উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে।
রোগীদের অভিজ্ঞতার কথাও জানা গেছে। রোগী হাব্বুর হোসেন বলেন, ‘প্রথমে আমার জ্বর হয়, পরে স্ত্রীর এবং তারপর ছেলের। তিনজনেরই উপসর্গ ছিল জ্বর, কাশি ও গলাব্যথা। বর্তমানে আমরা দুজন ভালো, তবে ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে।’
৫৫ বছর বয়সি মুন্নেজান বেগম, যিনি পাবনার ঈশ্বরদী থেকে এসেছেন, বলেন, ‘ডেঙ্গু বা করোনা হয়নি। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। জ্বর যাচ্ছিল না। গতকাল থেকে জ্বর কমেছে, এখন কিছুটা ভালো লাগছে, তবে শরীর দুর্বল।’
চিকিৎসকরা বলছেন, এটি সাধারণ ভাইরাস ফ্লু হলেও ঋতু পরিবর্তন এবং সচেতনতার অভাবে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। টাইফয়েড বা মৌসুমি ভাইরাসজনিত জ্বরও বেড়েছে।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, ‘সর্দি, জ্বর ও ডায়রিয়ার রোগী কিছুটা বেড়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সাধারণ মৌসুমি রোগ হিসেবে এটি প্রতি বছরই হয়ে থাকে। এবার প্রাপ্তবয়স্কদের আক্রান্ত হওয়ার হার তুলনামূলক বেশি।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন