ঢাকা শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পুঠিয়ায় সারের কৃত্রিম সংকট, বস্তাপ্রতি গচ্চা ৫৫০ টাকা

মো. আরিফুল হক, পুঠিয়া (রাজশাহী)
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
ডিএপি, টিএসপি ও এমওপি।

চলতি আমন মৌসুমের শুরুতেই কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে রাজশাহীর পুঠিয়ায় সারের ডিলার, সাব-ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ১,৩৫০ টাকার টিএসপি সার বিক্রি হচ্ছে ১,৬০০ থেকে ১,৯০০ টাকা পর্যন্ত। ফলে প্রতি বস্তায় কৃষকদের গচ্চা যাচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত।

কৃষকদের অভিযোগ, সারের দাম বেশি নেওয়া হলেও বেশিরভাগ ডিলার কোনো রসিদ দিচ্ছেন না। কেউ কেউ রসিদ দিলেও তাতে সরকার নির্ধারিত দামই দেখানো হচ্ছে। সার কিনতে গেলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা কৃত্রিম সংকটের কথা বললেও বেশি দাম দিলে সহজেই সার পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ডিলার দোকানের সরকারি মূল্য তালিকা ঢেকে রেখেছেন। আবার কোনো কোনো দোকানে মূল্য তালিকাই নেই।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) পৌরসভা ও দুটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, সরকারিভাবে ৫০ কেজি টিএসপি সারের দাম ১,৩৫০ টাকা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১,৬০০ থেকে ১,৯০০ টাকায়। ডিএপি সারের নির্ধারিত মূল্য ১,০৫০ টাকা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১,৩৫০ টাকা বা তারও বেশি দামে। এমওপি সারের দাম ১,০০০ টাকা হলেও বাজারে তা ১,২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া ‘বাংলা টিএসপি’ নামে একটি সার খুচরা বিক্রেতারা কৃষকদের কাছে বিক্রি করছেন ২,২০০ থেকে ২,৬০০ টাকা পর্যন্ত।

গন্ডগোহালী গ্রামের কৃষক রিপন রেজা বলেন, ‘ধান চাষ করতে টিএসপি সার খুবই প্রয়োজন। কিন্তু দোকানদাররা ঠিকমতো সার দিচ্ছে না। আবার দিলেও ১,৩৫০ টাকার সারের জন্য নিচ্ছে ১,৬০০ থেকে ১,৯০০ টাকা।’

কান্দ্রা গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ১০ বিঘা জমিতে চাষ করি। কিন্তু সার নিয়ে বড় ভোগান্তিতে পড়েছি। ডিলারের দোকানে গেলে চাহিদামতো সার পাওয়া যায় না। সময়মতো দোকানও খোলা থাকে না। ফলে বাধ্য হয়ে বেশি দামে বাইরে থেকে সার কিনতে হয়।’

একই অভিযোগ করেছেন ওই গ্রামের ফিরোজ হোসেনসহ আরও কয়েকজন কৃষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সাব-ডিলার ও খুচরা বিক্রেতা জানান, ডিলাররা প্রতিটি বস্তায় ২০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি নিচ্ছেন। এজন্য তাদেরও কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেশি নিতে হচ্ছে।

তবে ডিলারদের দাবি, চাহিদার তুলনায় কম বরাদ্দ পাওয়ায় বাজারে কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যেই সার বিক্রি করছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃমি রানী সরকার বলেন, ‘এ উপজেলায় সারের কোনো সংকট নেই। কেউ অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’