ঢাকা রবিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৫

‘গাছ কেটে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না’

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
কেটে ফেলার জন্য নাম্বারিং করা গাছ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গাছ কেটে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার দাবিতে রাজশাহীর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশ সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি-কে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ সময় রাজশাহীর সার্কিট হাউসের শতবর্ষী ও পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের বৃক্ষ সুরক্ষাসহ তিন দফা দাবিতে এ দাবি পেশ করা হয়।

আন্দোলনকারীরা বলেন, রাজশাহীর চরমভাবাপন্ন আবহাওয়াকে স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজন সবুজ বেষ্টনী এবং জলাধার। কিন্তু শহরের সবুজ বেষ্টনী ও জলাধারগুলোর বড় অংশই ইতোমধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে। নানাবিধ উন্নয়নের নামে রাজশাহীর প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর বারবার আঘাত হানা হয়েছে। কেটে ফেলা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী বৃক্ষরাজি। এখন উন্নয়ন মানেই গাছ কেটে কংক্রিটে ভরে দেওয়া।

তারা আরও বলেন, এ ধরনের অপরিকল্পিত উন্নয়ন মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে ফেলছে, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে অন্যান্য প্রাণীর আবাসস্থল ও অধিকার হরণ করছে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। এজন্য প্রকৃতিবান্ধব তথা টেকসই উন্নয়ন প্রয়োজন।

আন্দোলনকারীরা জানান, সার্কিট হাউসের শতবর্ষী ও পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের গাছগুলো বাঁচিয়ে রাখতেই হবে। পৃথিবীর বহু দেশ ও শহরে গাছ রক্ষা করে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের উদাহরণ রয়েছে।

রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি-কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

স্মারকলিপির দাবিসমূহ: 

  • রাজশাহীর সার্কিট হাউস সম্প্রসারণের জন্য সেখানে থাকা গাছগুলো কর্তন না করে সংরক্ষণ করতে হবে;
  • রাজশাহী বিভাগে ভবিষ্যতে গাছ, প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি না করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে; 
  • কোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে প্রয়োজনে পরিবেশকর্মী, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করতে হবে।

একই দাবিসম্বলিত স্মারকলিপির অনুলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এস.এম. তুহিনুর আলম, পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহীর উপ-পরিচালক মোছা. তাছমিনা খাতুন (পক্ষে সহকারী পরিচালক মো. কবীর হোসেন), রাজশাহী গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী এবং গণপূর্ত বিভাগ-১ রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাসেদুল ইসলামকে প্রদান করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন: উন্নয়নকর্মী মো. আফজাল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই-৩৬ পরিষদের সভাপতি মাহমুদ জামাল কাদেরী, ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)-এর সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার সান্যাল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী ওয়ালিউর রহমান বাবু, সেভ ইয়ুথ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপ্টারের সভাপতি সামসাদ জাহান, গ্রিন ভয়েস রাজশাহী কলেজ শাখার সভাপতি রাবেয়া খাতুন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের নির্বাহী সদস্য মো. হাসিবুল হাসনাত রিজভি এবং স্বচ্ছলতা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইহতেশামুল আলম জোহা।

এ ছাড়া সেভ ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড নেচার রাজশাহীর সভাপতি মো. ইমরুল কায়েস এবং ০.৬ গ্রাভিটি রাইডার্স-এর সভাপতি মাসুম মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।