রাজশাহীর দুর্গাপুর থানার দুই পুলিশ কনস্টেবল সাদা পোশাকে চাঁদাবাজির অভিযোগে ঘটনাস্থলে জনতার হাতে আটক ও গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। ঘটনার পর অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন দুর্গাপুর থানার জরুরি সেবা ‘ট্রিপল নাইনে’ কর্মরত ড্রাইভার কনস্টেবল ইমরান আলী এবং থানার কম্পিউটার অপারেটর কনস্টেবল মাজেদ হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্যামপুর গ্রামের আবু বাক্কারের ছেলে সজীব আহমেদ (২৫) অনলাইন ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত—এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করে ওই দুই পুলিশ সদস্য সজীবের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন তারা। বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা দুইজনের পরিচয় জানতে চান।
এ সময় বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থানীয়রা তাদের গণধোলাই দেন ও আটক করে থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে দুর্গাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
অন্য একটি সূত্র জানায়, কনস্টেবল ইমরান ও মাজেদ নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে সজীবকে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে তাদের আইডি কার্ড দেখতে চান, কিন্তু তারা তা দেখাতে ব্যর্থ হন।
দুর্গাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই দুই কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে তাদের পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।’
রাজশাহী জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত দুই সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো অনৈতিক আচরণ বরদাশত করা হবে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্প্রতি থানার কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে কনস্টেবল ইমরান আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। আমি ওই ছেলেকে (সজীব) চিনি না। সে আমাকে ডেকে নিয়ে গেছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে যাইনি।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘ঘটনাস্থল থেকেই কেউ জাতীয় জরুরি সেবা ৩৩৩ নম্বরে ফোন দেয়। এরপরই আমাদের পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।’


