রংপুরের পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হক সুমনকে ঠাকুরগাঁওয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) হিসেবে বদলি করা হলেও তিনি এখনও পুরোনো কর্মস্থলে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বদলির সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে তার এই কার্যক্রম এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা এবং নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন নিয়েও।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৫ জুনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইউএনও নাজমুল হক সুমনকে ২৫ জুনের মধ্যে পীরগাছা উপজেলা থেকে অবমুক্ত হতে হবে, অন্যথায় তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবমুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন। সেই অনুযায়ী বুধবার রাতে একটি বিদায় সংবর্ধনার আয়োজনও করা হয় রংপুর শহরের এক হোটেলে, যা পীরগাছার ইতিহাসে প্রথম।
তবে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে তাকে আবারও পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অফিস করতে দেখা যায়।
অভিযোগ রয়েছে, ওই দিন তিনি পুরোনো তারিখে বেশ কয়েকটি ফাইলে স্বাক্ষরও করেছেন।
এ বিষয়ে এক জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বদলির পরও তিনি দাপ্তরিক ক্ষমতা প্রয়োগ করছেন-এটি সরকারি বিধি লঙ্ঘন। প্রশাসনের জন্য এটি দুর্ভাগ্যজনক উদাহরণ।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, দায়িত্ব হস্তান্তরের পর পূর্বের কর্মস্থলে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা বিধিবিরুদ্ধ। এমন ঘটনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এরফানুল হক জানিয়েছেন, দায়িত্ব হস্তান্তরের পর অফিস করার কোনো সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
ইউএনও নাজমুল হক সুমনের বিরুদ্ধে মুজিববর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় ১০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ঘনিষ্ঠ হিসেবে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে এসব অনিয়ম চালিয়ে গেছেন। প্রকল্পে নির্মিত ৪৩০টি ঘরের কোনো কিছুরই মৌলিক অবকাঠামো ঠিকভাবে গড়ে তোলা হয়নি।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :