শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সাইফুল ইসলাম সানী, নালিতাবাড়ী

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ১১:৩৬ এএম

বিশ্ব আদিবাসী দিবস

শিক্ষায় উন্নতি, কর্মসংস্থানে পিছিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরা

সাইফুল ইসলাম সানী, নালিতাবাড়ী

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ১১:৩৬ এএম

বাঁশ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বাঁশ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

‘স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করে কিছু করা, না পারলে হাতের কাজ শিখব। কিন্তু আমাদের পাহাড়ি এলাকায় মেয়েদের কাজ শেখার বা করার সুযোগ তেমন নেই। স্বপ্ন দেখাটাই যেন ভুল ছিল।’—শেরপুরের নালিতাবাড়ীর গারো সম্প্রদায়ের নারী জ্যোতি চিরানের আফসোসের কথাগুলো বলে দেয় আদিবাসী নারীদের কর্মসংস্থানের কঠিন বাস্তবতা।

শুধু জ্যোতি চিরান নন, শেরপুর জেলার অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরাও কাজ করতে চান, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান। কিন্তু সুযোগের অভাবে অনেক সময় তাদের থেমে যেতে হয়। এই জেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এখনো অনেক পিছিয়ে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলার অধিকাংশ আদিবাসী নারী কোনো পেশায় যুক্ত নন। আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও প্রশিক্ষণ ও সুযোগের অভাবে তারা কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারছে না।

শেরপুরে মোট ২০ হাজার ৮৪০ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দা রয়েছেন। এর মধ্যে গারো জনগোষ্ঠী ৪৪.২%, বর্মা ২৭.৬৯%, কোচ ১০.২৪% এবং বাকিরা অন্যান্য জাতিসত্তার অন্তর্ভুক্ত। শিক্ষার হার ৬৪.০৮%। পুরুষ ৬৯.১৩% এবং নারী ৫৯.০৭%।

‘শেরপুর জেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা জরিপ ২০২৪’-এর তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন উপজেলায় কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীদের মধ্যে বড় ফারাক রয়েছে। শেরপুর সদর উপজেলায় পুরুষের কর্মসংস্থানের হার ৭৬.১৫%, নারীর মাত্র ১৯.৭%; ঝিনাইগাতীতে পুরুষ ৭৩.৫২%, নারী ৪৯.২১%; নকলায় পুরুষ ৭৩.৩৩%, নারী ২০.৯২%; নালিতাবাড়ীতে পুরুষ ৬৩.৪১%, নারী ২৬.৮৬%; শ্রীবরদীতে পুরুষ ৭৪.৮১%, নারী ২৯.২১%।

বিশ্লেষণে স্পষ্ট হয়, পুরুষদের কর্মসংস্থানের হার বেশি হলেও নারীদের অংশগ্রহণ খুব কম, যা নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্যের ইঙ্গিত বহন করে।

অধিকাংশ নারী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত, শিক্ষার সুযোগ কম থাকায় কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পথ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নালিতাবাড়ীর গারো সম্প্রদায়ের নারী সূচনা জেংসাম বলেন, ‘আমি উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছি, কিন্তু কাজের সুযোগ পাই না। আমাদের নারীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা প্রয়োজন।’

গারো নারী লিনা সাংমা যোগ করেন, ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরা চাইলে অনেক কিছু করতে পারে, কিন্তু তাদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং পুঁজি—দুটোই অনুপস্থিত।’

নালিতাবাড়ী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কোপেন্দ্র নকরেক বলেন, ‘আদিবাসী নারীদের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্রঋণ ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত না করলে বৈষম্য কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। সরকারের উচিত আলাদা বাজেট বরাদ্দ, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং হস্তশিল্প ও কৃষিভিত্তিক উদ্যোগে সহায়তা দেওয়া। পাশাপাশি শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো দরকার, যা দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।’

Shera Lather
Link copied!