ঠাকুরগাঁও ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারকালে এক প্রসূতির পেটে গজ ও স্যানিটারি প্যাড রেখে সেলাই করে রিলিজ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নার্স ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গেল ২৫ জুলাই রাতে পৌর শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার আবুজর গিফারীর স্ত্রী সাথী আক্তারকে লিভারের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ভোরে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান জন্মের সময় তার এক সাইডে অস্ত্রোপচার করা হয়। এসময় ভেতরে গজ ও একটি প্যাড রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক ও নার্সরা। পরে গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমানের তত্ত্বাবধানে রোগীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ১৭ আগস্ট সাথী আক্তার প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে কর্তব্যরত নার্সরা ডাক্তার ডাকতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে রোগীর স্বজনরা ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে নিয়ে গেলে তিনি রোগীর প্রস্রাবের রাস্তা থেকে একটি সম্পূর্ণ স্যানিটারি প্যাড বের করেন।
রোগীর স্বামী আবুজর গিফারী বলেন, গতকাল আমার স্ত্রী ব্যথা অনুভব করলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানকার নার্স ও চিকিৎসকদের কাছে ভালো সেবা না পেয়ে ডাক্তার ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে নিয়ে যাই। তিনি আমার স্ত্রীকে ভালোভাবে চেকআপ করে গজ ও একটি প্যাড বের করেন। এটা যদি আরও কিছুদিন ভেতরে থাকতো তাহলে হয়ত আমার স্ত্রীর জীবন রক্ষা করা সম্ভব হতো না।
তিনি আরও বলেন, ডা. আইরিশ রহমান কীভাবে একজন রোগীকে ভালোভাবে না দেখে রিলিজ দিলেন? অবশ্যই তার গাফিলতি রয়েছে। এর আগেও এই চিকিৎসকের নামে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। তার পরেও কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না।
শুধু চিকিৎসক নন, হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে, তারা ঠিকমতো রোগীদের সেবা দেন না। আমি ওই চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।আশা করি তত্ত্বাবধায়ক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. আইরিশ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ফিরোজ জামান জানান, রোগীর স্বজনরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায়, তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।