ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে পাথর কালী মেলায় এবারো হাজারো মানুষের সমাগম হলেও অনুষ্ঠিত হয়নি দুই বাংলার মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত মিলন মেলা। প্রতিবছরের মতো এবারো বহু নারী-পুরুষ মেলায় এলেও সীমান্তে কোনো মিলন সম্ভব হয়নি।
বর্ষ পুঞ্জিকা অনুযায়ী শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) হিন্দু সম্প্রদায় প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের এই দিনে উপজেলার ভাতুরিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর কুলিক নদীর পাড়ে শ্রীশ্রী জামর কালী জিউ (পাথর কালী) মন্দিরে আয়োজন করে কালিপূজা।
এই পূজাকে কেন্দ্র করে বহু বছর ধরে কুলিক নদীর তীরে ভারতের তারকাটা বেড়া সংলগ্ন কোচল, চাপসার ও গোবিন্দপুর এবং ভারতের নারগাঁও ও মাকরহাট সীমান্তের দুই পাশে দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষের উপস্থিতিতে এক অনন্য মিলনমেলার পরিবেশ সৃষ্টি হতো।
এ সময় আগত লোকজন তাঁদের স্বজনদের কাছে পেয়ে কিছু সময়ের জন্য কথা বলা, কুশল বিনিময়, বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার, কাপড়, প্রসাধনী, মিষ্টি ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী আদান–প্রদান করতেন। বহুদিন পরে কাছের মানুষকে কাছে পেয়ে অনেকেই আবেগে অশ্রুসিক্ত হতেন। সীমান্তের কাঁটাতার দুই বাংলার মানুষকে আলাদা করে রাখলেও এই একদিনের মিলনমেলাই ছিল বছরের অপেক্ষার বিষয়।
তবে ২০১৯ সালে করোনা মহামারির সময় জনসমাগম এড়াতে ভারত সীমান্ত এলাকায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর মিলন মেলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এ বছরও ভারত ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতির কারণে সীমান্ত রক্ষীরা কঠোর অবস্থান নেয়।
প্রতি বছরের মতো ডিসেম্বর মাসে কালিপূজা হলেও সীমান্তের কাঁটাতারের ধারে মিলনমেলা আর অনুষ্ঠিত হয়নি। এবারো শুক্রবার পূজা উপলক্ষে হাজারো মানুষের সমাগম হলেও মিলনের কোনো সুযোগ হয়নি। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কঠোর নির্দেশনা জারি ছিল। ফলে মিলনমেলার আশায় আসা মানুষজন বিফল হয়ে ফিরে যান।
এ বিষয়ে পাথর কালী পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নগেন কুমার পাল বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারো আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করেছি। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় সীমান্তে কোনো মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।’
তিনি বলেন, দূরদূরান্ত থেকে যারা এসেছিলেন, তারা অশ্রুসজল নয়নে বিফল মনে ফিরে গেছেন।’



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন